|
|
|
|
সাহাগঞ্জে ইটভাটায় ‘আটক’ শ্রমিকদের উদ্ধার করল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ থেকে ব্যান্ডেলের সাহাগঞ্জের একটি ইটভাটায় কাজ করতে আসা কিছু শ্রমিককে ‘আটকে’ রাখার অভিযোগ উঠল ওই ভাটা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত বুধবার রাতে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে ভাটায় ‘আটক’ তিন মহিলা শ্রমিককে উদ্ধার করেন। প্রশাসনের চাপে পড়ে ভাটা কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকদের পাওনাও মিটিয়ে দেয়। চুঁচুড়ার মহকুমাশাসক (সদর) জলি চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ভাটা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৭ জনের বকেয়া ৭০ হাজার ৮০০ টাকা ওই শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ওই শ্রমিকরা ট্রেনে করে ময়ূরভঞ্জ রওনা হয়েছেন।”
জেলা প্রশাসন ও ইটভাটা সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে ময়ূরভঞ্জ থেকে ৪ জন পুরুষ এবং ৩ জন মহিলা সাহাগঞ্জের ওই ইটভাটায় কাজ করতে আসেন। এক ‘সর্দার’-এর মাধ্যমে তাঁরা এখানে আসেন। ওই ব্যক্তির মধ্যস্থাতাতেই ভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের চুক্তি হয়আগামী জুন মাস পর্যন্ত কাজ করার। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথাও চুক্তিতে বলা হয়। যদিও, শ্রমিকদের অভিযোগ, আদৌ তাঁদের হাতে টাকা দেওয়া হত না। বার বার অনুরোধ করেও ফল হয়নি। কেবলমাত্র ৭ জনের খাওয়া খরচ বাবদ প্রতিদিন ২০০ টাকা দেওয়া হত। শ্রমিকদের আরও অভিযোগ, ইটভাটার বাইরে তাঁদের যেতে দেওয়া হত না। কার্যত ‘আটকে’ রাখা হত। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দিন কয়েক আগে পুরুষ শ্রমিকরা কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। এটা জানার পরেই তাঁদের ‘আটকে’ রাখা হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত চার জন পুরুষ সেখান থেকে পালিয়ে যান। মহিলারা অবশ্য থেকে যান।
ভাটা থেকে বেরিয়ে ওই চারজন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে টেলিফোনে বিষয়টি জানান। ওই সংগঠনের প্রতিনিধিরা হুগলির জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
জেলাশাসক চুঁচুড়ার মহকুমাশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। চুঁচুড়া থানার পুলিশকে নিয়ে মহকুমাশাসক বুধবার রাতেই ওই ইটভাটায় হানা দেন। ভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাসন্তী হেমব্রম, চম্পা হেমব্রম, রাসমণি হাঁসদা নামে ওই তিন মহিলাকে ‘উদ্ধার’ করে চুঁচুড়া থানায় আনা হয়। ওই শ্রমিকদের যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দিতে বলা হয় ভাটা কর্তৃপক্ষকে। সেইমতো শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে দিয়ে রেহাই পান ভাটা কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, হুগলিতে এর আগেও ইটভাঁটায় শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনাটি ছিল ভদ্রেশ্বরের। সে ক্ষেত্রেও পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল। এ দিন প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ভিন্ রাজ্য থেকে পেটের তাগিদে যে সব গরিব মানুষ জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করতে আসেন, তাঁদের উপর কোনও ভাবেই নির্যাতন বরদাস্ত করবে না প্রশাসন। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|