|
|
|
|
জাহাজডুবি |
ঘরে ফিরেও আতঙ্ক কাটেনি ভারতীয়দের |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
দেশে পা রেখেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন। জড়িয়ে ধরলেন প্রিয়জনকে। ইতালির অভিশপ্ত প্রমোদতরী কোস্টা কনকর্ডিয়া থেকে বেঁচে ফিরেছেন। কিন্তু আতঙ্কের ছায়া এখনও মিলিয়ে যায়নি চেহারা থেকে। আজ বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছল কনকর্ডিয়ায় সওয়ার ভারতীয়দের উড়ান। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কলকাতার এক বাসিন্দাও। কাল আরও ১২৫ যাত্রী দেশে ফিরতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ১৪ জানুয়ারি বালির চরে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় ১১তলা জাহাজটি। কনকর্ডিয়ায় সে দিন ২০৩ জন ভারতীয় ছিলেন। এক জন বাদে বাকি সকলকেই উদ্ধার করা গিয়েছে। যাঁরা ফিরলেন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা ২৯ বছরের ইজাজ আহমেদ। জানালেন, ৪ হাজারের বেশি যাত্রী নিয়ে রোমের কাছেই একটি বন্দর থেকে মিলানের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনার সময় জাহাজের ৯ তলায় রান্নাঘরে ছিলেন তিনি। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে একটি দ্বীপের পাথরে ধাক্কা খায় জাহাজটি। ইজাজ বলেন, “ধাক্কা খাওয়ার পরে জাহাজটি বাঁ দিকে হেলে যায়। চার দিকে তখন কান্না আর আর্তনাদ। যেন টাইটানিক সিনেমা দেখছি। কোনও মতে চার তলার মাস্টার স্টেশনে ফেরত যাই। সেখান থেকে লাইফ বোটে একটি দ্বীপে গিয়ে উঠি। সারারাত কিছু খাবার পাইনি।” সারা রাত ২১টি লাইফ বোটে জাহাজের যাত্রীদের ওই দ্বীপে নিয়ে আসার কাজও করেন ইজাজরা। কর্মরত সংস্থার কাছ থেকে ইজাজ ৩ হাজার ডলার বেতন ছাড়াও ১ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে আর বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার ইচ্ছা নেই তাঁর। তিনি বলেন, “আর বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। যদি এখানেই কিছু কাজ মেলে ভাল হয়।”
এ দিকে নয়াদিল্লিতে নেমে ২৬ বছরের মুকেশ বলেন, ‘কল্পনার বাইরে’। জাহাজের ক্যাপ্টেনের দিকে অপর এক যাত্রী ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। “সবটাই ক্যাপ্টেনের ভুল। বিপদ বুঝেও তিনি অনেক দেরিতে সাহায্য চেয়ে পাঠান।” জাহাজের কর্মী সুজন সিংহ খান্ডুরির মতে, উদ্ধারকর্মীদের দক্ষতার জন্যই এত জনকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। তবে জাহাজ সংস্থার কাজে যোগ দিতে ফের ইতালিতে ফিরে যাবেন সুজন। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন তামিলনাড়ুর বিনোদ কুমার ও ইফতিকার বসির আহমেদ। বেঙ্গালুরুতে নেমে তাঁরা জানিয়েছেন, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে পুনর্জন্ম হল!” |
|
|
|
|
|