বুন্দেলখণ্ডে দাপট কার? ঘরের মেয়ের না ঘরের ছেলের?
কাল রাতে উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড থেকে প্রার্থী হিসেবে উমা ভারতীর নাম ঘোষণার পরেই আজ রাহুল গাঁধীর আক্রমণের লক্ষ্যে চলে এলেন তিনি। বুন্দেলখণ্ডে প্রচারে গিয়ে রাহুল আজ উমার নাম না করে বলেন, “বিজেপির এক নেত্রী মধ্যপ্রদেশ থেকে এসেছেন। বুন্দেলখণ্ডে কৃষক মৃত্যুর সময় তিনি কোথায় ছিলেন? ভোট আসতে তিনি আপনাদের কাছে এসেছেন।”
রাহুলের এই মন্তব্যের পরেই পাল্টা জবাবে উমা বলেন, “আমি নয় মধ্যপ্রদেশ থেকে এসেছি। কিন্তু রাহুলের মনে রাখা উচিত, তাঁর মা সনিয়া গাঁধী ইটালি থেকে এসেছেন। ভারত তাঁকে গ্রহণও করেছে। মধ্যপ্রদেশে রাহুলের গুরু দিগ্বিজয় সিংহকে আমি হারিয়েছি। এ বারে গুরু-শিষ্য উত্তরপ্রদেশের ভোট ময়দানে রয়েছেন। দু’জনকেই আমি হারাব।” বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, রাহুল গাঁধী-দিগ্বিজয় সিংহের মতো নেতাদের টক্কর দিতে উত্তরপ্রদেশে উমার মতোই এক জনকে দরকার। উমা যা পারবেন, তা অন্য কাউকে দিয়ে সম্ভব নয়। গত কাল নিতিন গডকড়ী নিজে উমার নাম ঘোষণার পাশাপাশি তাঁকে কার্যত উত্তরপ্রদেশে দলের ‘মুখ’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে উমাও এখন নতুন উদ্যমে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়েছেন। বুন্দেলখণ্ডের ‘বেটি’ হিসেবে তো বটেই, দলের মুখ হিসেবে গোটা রাজ্যেই প্রচার চালাবেন উমা। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, উমা আসরে নামায় কংগ্রেস যে ভয় পাচ্ছে, রাহুলের প্রতিক্রিয়াতেই তা স্পষ্ট। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে রাহুলের মূল নিশানা মায়াবতীই। প্রয়োজনে মুলায়মকেও আক্রমণ করেন তিনি। আজ বুন্দেলখণ্ডে প্রচার করতে গিয়েছিলেন বলেই তিনি উমার প্রসঙ্গ টেনেছেন।
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, গত তিন বছর ধরে বুন্দেলখণ্ডের উন্নয়নের জন্য লড়াই করছেন রাহুল। সেখানকার পিছিয়ে পড়া এলাকায় শুধু প্রচার করেই থামেননি, ওখানকার লোকেদের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও নিয়ে এসেছেন। এলাকার জন্য প্যাকেজও ঘোষণা হয়েছে। এই অবস্থায় বুন্দেলখণ্ডের ‘বেটি’ বলে পরিচিত উমাকে বিজেপি স্বাভাবিক কারণেই সেখানে কাজে লাগাবে। তিনি ওবিসি নেতা, অন্য দিকে হিন্দুত্বের মুখ। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “উমা যদি বুন্দেলখণ্ডের বেটি হন, রাহুল কেন এত বছরের পরিশ্রমের পর সেখানকার ঘরের ছেলে হতে চাইবেন না?”
বুন্দেলখণ্ডের জন্য রাহুলের ‘প্যাকেজ’কে কটাক্ষ করে উমা বলেন, “আমি গোটা বুন্দেলখণ্ডে ঘুরে প্যাকেজের সন্ধান করছি! বুন্দেলখণ্ডের প্যাকেজ কোথায়? কৃষকরা এখনও আত্মহত্যা করছেন। দিল্লিতে মজদুরি করছেন।”
কংগ্রেস নেতা রশিদ অলভি বলেন, “উত্তরপ্রদেশে উমাকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছি না। বিজেপিই তাঁকে মধ্যপ্রদেশ থেকে তাড়িয়েছে! পাশের রাজ্যে গিয়ে তিনি কী করবেন? উত্তরপ্রদেশের নেতা হয়ে যদি আমি এখন অন্ধ্রে যাই, তা হলে যা হবে, উমার ভবিষ্যৎও তাই!” |