রঘুনাথগঞ্জে ১ পঞ্চায়েত সমিতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
জেলা পরিষদের ছায়া পড়ল রঘুনাথগঞ্জ ১ পঞ্চায়েত সমিতিতেও। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় খসড়া বাজেট পাশই করতে পারল না বামফ্রন্ট নিয়ন্ত্রিত পঞ্চায়েত সমিতি। কংগ্রেস সদস্যদের বয়কটের ফলে বৃহস্পতিবারের ডাকা খসড়া বাজেট সভা মুলতুবি করেই রেখে দেওয়া হল। এর ফলে সমস্যায় পড়ল ওই পঞ্চায়েত সমিতির বাজেট বরাদ্দ। বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে ওই পঞ্চায়েত সমিতি প্রায় ৪ কোটি টাকা পেয়ে থাকে। বাজেট পাশ না হলে সে টাকা খরচ করতে পারবে না তারা। ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে সদস্য সংখ্যা ১৭। এক সদস্যের মৃত্যুর পরে একটি আসন শূন্য। ৯ সদস্যের সমর্থনে এই পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় রয়েছে বামফ্রন্ট। বিরোধী কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৮। তবে পঞ্চায়েতে পদাধিকারী সাধারণ সদস্য রয়েছেন ৬ জন প্রধান, ২ জন জেলা পরিষদ সদস্য ও ১ জন বিধায়ক। অর্থাৎ, নির্বাচিত ও সাধারণ সদস্য মিলিয়ে ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জনই কংগ্রেসের। স্বাভাবিক ভাবেই ১১ সদস্য নিয়ে বামফ্রন্ট সংখ্যালঘিষ্ট। এই অবস্থায় সাধারণ সভা ডেকে বাজেট পাশ করাতে গিয়ে জেলা পরিষদের মতোই বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট বোর্ড। বৃহস্পতিবার খসড়া বাজেট সভা বয়কট করেন কংগ্রেসের সদস্যেরা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের আসরাফ হোসেন বলেন, “সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে কংগ্রেসের। স্বভাবতই বৃহস্পতিবার খসড়া বাজেট সভায় বাজেট পাশের জন্য তাঁদের সমর্থন চাওয়া হয়। এই ব্যাপারে বিরোধী দলনেতাকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা বৃহস্পতিবারের সভায় হাজির হননি। ‘কোরাম’ না থাকায় সভা হতে পারেনি।” তিনি বলেন, “খসড়া বাজেট পেশ না হলে ব্লকের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন এক বছর পরেই। সে ক্ষেত্রে এলাকার উন্নয়ন থমকে গেলে গ্রামবাসীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
এই পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের তসিকুল ইসলাম বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সাধারণ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা কংগ্রেসের। তবু ৯টি স্থায়ী সমিতি দখল করে রেখেছে তারা। যৌথ ভাবে উন্নয়নের স্বার্থে ৪টি স্থায়ী সমিতি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি বামবোর্ড। বিরোধী সদস্য হিসেবে কংগ্রেসকে কোনও মর্যাদাও দেওয়া হয়নি।” তাঁর দাবি, “কংগ্রেসের এলাকায় উন্নয়নের কাজ না করে নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করেছে বামবোর্ড।” সভাপতি আসরাফ হোসেন অবশ্য বলেন, “কংগ্রেস সদস্যদের বলা হয়েছিল কোথায় কোথায় কী কী উন্নয়ন করতে চান, তার তালিকা দিন। যৌথ ভাবেই বাজেট করে উন্নয়ন করা হবে। তারপরেও তাঁরা আসেননি।”
পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য ও সিপিএমের মিঞাপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক অনিল ঘোষ বলেন, “জেলা পরিষদেও একই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। নির্বাচিত সদস্যের হিসেবে বামেরা ক্ষমতায় থাকলেও সাধারণ সভায় গরিষ্ঠতা কংগ্রেসের। কিন্তু এই ভাবে অচলাবস্থা তৈরি না করে উচিত সকলের এক সঙ্গে উন্নয়নের কাজ করা।” বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “কোরামের অভাবে বৃহস্পতিবার সভা ডাকা হলেও তা মুলতুবি করে দেওয়া হয়। সে সভা পুনরায় কবে ডাকা হবে, তা বলতে পারব না।” |