কারখানা অলাভজনক হয়ে পড়েছে। এমন কারণ দেখিয়ে মাস চারেক আগে কর্মবিরতির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর জুট মিল। সেই থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে কারখানাটি। শ্রমিক সংগঠনগুলির অবশ্য দাবি, লোকসানের কথা ঠিক নয়। সম্প্রতি আসানসোলে এসে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, কারখানাটি দ্রুত খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ হচ্ছে।
মাস চারেক আগে এই কারখানাটিতে কর্মবিরতির নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই বন্ধ পড়ে রয়েছে কারখানা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক-কর্মী। দুই শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি এবং সিটুর অভিযোগ, মালিকপক্ষকে বারবার কারখানা খোলার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। দুই সংগঠনই এ ব্যাপারে আলাদা ভাবে শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, “মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, তাঁরা আর কারখানা চালাতে চাইছেন না। তবুও আমরা তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট ভাবে সমস্যাগুলি জানতে চেয়েছি। কারখানাটি যাতে শীঘ্র চালু করা যায় সে জন্য আলোচনা চলছে।”
আইএনটিটিইউসি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু শ্রমিককে অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে কারখানা খোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমরা এই প্রস্তাবে রাজি হইনি। মালিকপক্ষকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি, আগে কারখানা খুলতে হবে। তার পরে শ্রমিকদের সরানোর ব্যাপারে আলোচনা হবে।” একই বক্তব্য সিটু নেতা রুনু দত্তের। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা লিখিত ভাবে আগে কারখানা চালু করার দাবি জানিয়েছি।” উভয় সংগঠনেরই অভিযোগ, কারখানা অলাভজনক হয়ে পড়ার যে দাবি কর্তৃপক্ষের তরফে করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।
এ দিকে, আসানসোলের বন্ধ কাচ কারখানার জমিতে শিল্পই গড়তে হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। সম্প্রতি মহাকরণে তাঁর দফতরেপ্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীরা আসানসোলের বন্ধ ওই কারখানাটি পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছেন। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “শুনেছি, যাঁরা এই কারখানাটি কিনেছেন তাঁরা এখনও পর্যন্ত কারখানা চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হননি। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সেখানে কারখানার জমি প্লট করে বিক্রিরও পরিকল্পনা হয়েছে। তা কিছুতেই হতে দেওয়া হবে না। বন্ধ কারখানার জমিতে শিল্পই গড়তে হবে।”
তিনি আরও জানান, মালিক ও শ্রমিক, উভয় পক্ষের সঙ্গেই তাঁর আলোচনা হয়েছে। দু’তরফেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরে আরও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। |