২৬শে স্টেডিয়ামে সূর্যোদয়
তে পারে মূক ও বধির। কিন্তু কোনও কাজে পিছিয়ে নেই তার প্রমাণ দিতে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রজাতন্ত্র দিবসে আয়োজিত কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে ওরা ব্যান্ডের তালে পা মেলাবে। রায়গঞ্জ ষ্টেডিয়াম মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘গার্ড অফ অনার’ জানাবে জেলাশাসককে। ওরা অর্থাৎ রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতরের অধীন রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক প্রতিবন্ধী হোমের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির একদল পড়ুয়া। ওই ছেলেমেয়েরা কুচকাওয়াজের পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে। প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের অনুষ্ঠান দেখতে মুখিয়ে আছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলা। হোম কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ইতিমধ্যে আবাসিকদের নিয়ে স্টেডিয়াম মাঠে জোরকদমে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “সূর্যোদয়ের আবাসিকেরা মূক ও বধির হলেও দক্ষতা ও উৎসাহে পিছিয়ে নেই। ওরা কানে শুনতে না-পেলেও প্যারেডে ও নাচে অংশগ্রহণ করবে। জেলা প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ এ বার ভাল অনুষ্ঠান উপহার পাচ্ছে।”
প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রস্তুতি। বুধবার রায়গঞ্জে তরুণ দেবনাথোর তোলা ছবি
হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩১ মূক ও বধির আবাসিক কিশোর প্যারেডে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। হোমের অন্য ১৩ জন আবাসিক কিশোর এবং ২৬ জন কিশোরী নৃত্য পরিবেশন করবে। ওদের দিনভর তালিম দিচ্ছেন হোমের শিক্ষকশিক্ষিকারা। কিন্তু যারা কথা বলতে পারে না। কানে শুনতে পায় না। তাদের পক্ষে ব্যান্ড ও গানের তালে প্যারেড অথবা নৃত্য পরিবেশন করা কেমন করে সম্ভব! কৌতুহল রয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকের মধ্যে। সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক প্রতিবন্ধী হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথী দাস বলেন, “হোমের শিক্ষক শিক্ষিকারা এক বছর ধরে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যান্ড বাজিয়ে আবাসিক কিশোরদের প্যারেড তালিম দিয়েছেন। উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে ইশারার মাধ্যমে নাচ শিখিয়েছেন। কানে শুনতে না-পেলেও ছেলেমেয়েরা কঠোর অনুশীলনে অনুভবের মাধ্যমে ব্যান্ডের তালে প্যারেড এবং গানের তালে নাচ রপ্ত করেছে।” হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, ২৬ জানুয়ারি সূর্যোদয়ের আবাসিকদের প্যারেড ও নৃত্য দেখে দর্শক বুঝতে পারবে না তারা মূক ও বধির। উৎসাহ এবং অনুশীলনের বলে ওরা অসাধ্য কাজ করে দেখাবে। তবে প্যারেড ও নাচ পরিবেশন করার সময়ে দর্শকদের মূক বধিরদের চিনতে যেন অসুবিধা না-হয় সে জন্য আবাসিকদের কানে শ্রবণযন্ত্র লাগিয়ে দেওয়া হবে। পার্থবাবুর কথায়, “ওরা জন্ম থেকে মূক ও বধির। তাই শ্রবণযন্ত্র সে ভাবে ওদের কাজে লাগে না। তবু সাধারণ দর্শকদের সুবিধার জন্য শ্রবণযন্ত্র কানে লাগিয়ে ছেলেমেয়েদের মাঠে নামানো হবে।” আবাসিকদের ওই উদ্যোগের কথা শুনেছেন জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারপার্সন সুনীলকুমার ভৌমিক। তিনি বলেন, “মূক বধির আবাসিকদের আত্মবিশ্বাস সফলতার শীর্ষে পৌছে দিতে সাহায্য করবে। ওদের শিক্ষিত ও স্বনির্ভর করতে কমিটির তরফে রাজ্য সরকারের কাছে একাধিক প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সূর্যোদয়ের মূক বধির আবাসিক ছাড়া প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে এনসিসি, বিএসএফ, পুলিশ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সহ রায়গঞ্জের স্কুল কলেজের ৪০টিরও বেশি দল অংশ নেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.