পৃথক কোচবিহার দাবিতে আন্দোলনকারী সব সংগঠনকে এক ছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী হয়েছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক বংশীবদন বর্মন। প্রায় ৬ বছর পরে জেল থেকে সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পাওয়া বংশীবদনবাবুর সঙ্গে ইতিমধ্যে একাধিক সংগঠনের নেতাদের প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। বংশীবদনবাবু বলেন, “বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একজোট না থাকায় আন্দোলন অনেকটা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সেজন্যই ইতিমধ্যে অনেকেই আবার একজোট হবার ব্যাপারে আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন। জেলে বন্দি বাকী ৩০ জন সমর্থকের জামিন হলেই সংগঠনগুলিকে নিয়ে ওই বিষয়ে বৈঠক ডাকতে চাইছি। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।” ওই উদ্যোগে সামিল হওয়ার কথা ভাবছেন গ্রেটার কোচবিহার ডেমোক্রেটিক পার্টি, কোচবিহার আইন পরিষদ, গ্রেটার কোচবিহার বন্দিমুক্তি কমিটি সহ গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের শিবাজি সরকার, নলিনীকান্ত বর্মনের নেতৃত্বধীন শিবিরের নেতারা। গ্রেটার কোচবিহার ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি আশুতোষ বর্মা বলেন, “ভারত ভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহার গ শ্রেণির রাজ্য। ওই চুক্তি রুপায়ণের জন্য পৃথক পৃথক ভাবে আন্দোলনরত সবাইকে একজোট করতে বংশীবাবুকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওঁকে সামনে রেখে আন্দোলনে আমাদের আপত্তি নেই।” গ্রেটার কোচবিহার বন্দিমুক্তি কমিটির মুখপাত্র আনোয়ার হোসেন জানান, প্রথমে তাঁরাও জিসিপিএ-তে ছিলেন। বংশীবাবু চাইলে ফের একজোট হয়ে লড়তে ইচ্ছুক তাঁরাও। কোচবিহার আইন পরিষদের নেতা পরেশ বর্মন জানিয়েছেন, তাদের সংগঠনের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রেখে যৌথ কর্মসূচি নিলে তাঁরাও তাতে সামিল হবেন। একইভাবে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের তিনটি গোষ্ঠীর মধ্যে রায়গঞ্জের শিবাজি সরকার বলেন, “জিসিপিএর সভাপতি হিসাবে আমি বংশীদার সঙ্গে দেখা সকলকে একজোট করতে বৈঠক ডাকতে অনুরোধ করেছি। এটার প্রয়োজন আছে।” জিসিপিএর নলিনীকান্ত বর্মন নেতৃত্বাধীন শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা সাংস্কৃতিক সংগঠক গিরিন্দ্র দাসের বক্তব্য, “সবাই বসে একজোট হলে আমাদের আপত্তির ব্যাপার নেই।” তবে কোচবিহারে সাম্প্রতিক সময়ে রাস্তা দখল করে অনশন, রাজবাড়ির পেছনে তাঁবু খাটিয়ে অনশন করেছেন যাঁরা, সেই গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নমিতা বর্মন সাফ জানিয়েছেন, বংশীবদনের ব্যাপারে তাঁদের কোন আগ্রহ নেই। নমিতা দেবী বলেন, “বংশীবদনবাবুর সঙ্গে যৌথ আন্দোলনের প্রশ্নই নেই।” গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ১৯৪৮-৪৯ সালের ভারত ভুক্তির চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহার গ শ্রেণির রাজ্য। ওই দাবি বাস্তবায়নে ১৯৯৮ সালে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়। বংশীবদন বর্মন তাঁর সম্পাদক হন। ২০০৫ সালে বংশীবদনের নেতৃত্বেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার। |