বালুরঘাটের শিক্ষক পারিজাত সাহার সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার যে অঙ্ক রবিবার দেখা গিয়েছিল, বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিকেলের পর থেকে অবশ্য তাঁর অ্যাকাউন্টে ‘ওই বিপুল পরিমাণ টাকা আর দেখায়নি।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে দাবি করা হয়েছে, এটি নিছকই ‘ফলস’ বা ভুল ‘এন্ট্রি’-র ঘটনা। প্রকৃতপক্ষে ওই পরিমাণ টাকা কখনওই পারিজাতবাবুর অ্যাকাউন্টে যায়নি। এবং সেই টাকা কোনও ভাবে তোলাও যেত না। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১০ লক্ষ বা তার বেশি টাকার লেনদেন হলেই কোনও ব্যাঙ্কের অনেক কড়াকড়ি থাকে। ফলে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেহাত হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না।
|
স্কুলশিক্ষক
পারিজাত সাহা।
ফাইল চিত্র |
কেন এই ধরনের ‘বিভ্রাট’ ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে স্টেট ব্যাঙ্কের মুম্বইয়ের সদর দফতরের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতার চিফ জেনারেল ম্যানেজারের তরফেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর। ব্যাঙ্কের এক পদস্থ কর্তা এ দিন বলেন, “এটাকে ফলস এন্ট্রি বলা যেতে পারে। শুধু পারিজাতবাবু নন, মঙ্গলবার ওই সময় নেটব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করা আরও কয়েক জন গ্রাহকের ক্ষেত্রেও একই জিনিস ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের ধারণা, ইন্টারনেটে গোলযোগের ফলেই এটা ঘটেছে। ওই গ্রাহকেরা কোন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের মাধ্যমে নেটব্যাঙ্কিং পরিষেবা নিচ্ছিলেন, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি।”
রবিবার সন্ধ্যায় বালুরঘাটের দীপালিনগর এলাকার বাসিন্দা পারিজাতবাবু তাঁর স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার স্থানীয় শাখার রেকারিং অ্যাকাউন্ট থেকে মেয়াদের আগেই ১০ হাজার ৩১৩ টাকা নেট-ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে তুলে নিয়ে সেভিংস-অ্যাকাউন্টে ফেলেন। কিন্তু, সেভিংসে মোট টাকার অঙ্ক দেখায় ৪৯ হাজার ৫৭০ কোটি ৮ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৩৮ টাকা! বালুরঘাটের শাখার মুখ্য ম্যানেজার শুভাশিস কর্মকারের দাবি, পারিজাতবাবু মঙ্গলবার ব্যাঙ্কে লিখিতভাবে ঘটনাটি জানানোর পর প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, ওই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের ‘ক্লিয়ার ব্যালান্স’-এ ১৮ হাজার ২২৬ টাকা (যা তাঁর জমানো)-ই দেখাচ্ছে। কিন্তু ‘ট্রানজাকশনে’ দেখাচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
স্টেট ব্যাঙ্কের এজিএম (আইটি সার্ভিসেস) তপন মিত্র বলেন, “কেন এমন হল, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে ব্যাঙ্কের ব্যালান্সে এর ফলে কোনও প্রভাবই পড়েনি। কারণ ওই টাকা কখনওই পারিজাতবাবুর অ্যাকাউন্টে যায়নি।” অন্য কোনও অ্যাকাউন্ট থেকে ভুল করে
টাকা চলে আসার সম্ভাবনাও তপনবাবু খারিজ করে দিয়েছেন। |