কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন মালদহ জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অরূপ দাস। তিনি ছাড়াও মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসের ৮ জন সদস্য ও চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ জন কংগ্রেস সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন বলে অরূপবাবুর দাবি।
সিপিএমের সাহায্য নিয়ে জেলা পরিষদের বাজেট পাস করানো, তাঁর এলাকার উন্নয়নের টাকা কেটে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ তুলেছেন অরূপবাবু। তিনি দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করায় কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মালদহ জেলা পরিষদ সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে। মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতিও কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে চলেছে।
|
খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অরূপ দাস।
নিজস্ব চিত্র |
বুধবার দুপুরে মালদহ জেলা পরিষদে নিজের ঘরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরিকে এক হাত নিয়ে অরূপবাবু বলেন, “উনি আমাদের কথাই শুনছেন না। আমাদের অবজ্ঞা করছেন। কংগ্রেসে আর থাকা যায় না। ২৩ জানুয়ারি আমি ও আমার সঙ্গে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির ৮ কংগ্রেস সদস্য, ১০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।”
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলে দলবিরোধী আইনে সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে। অরূপবাবু জানান, খারিজ হলেও তিনি আর কংগ্রেসে নেই। সাবিত্রীদেবী জানান, সবাইকে দলে স্বাগত জানানো হয়েছে।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরি বলেন, “দু’-একজন চলে গেলে কংগ্রেসের কোনও ক্ষতি হবে না। তৃণমূল কংগ্রেস নানা প্রলোভন দেখিয়ে কংগ্রেস ভাঙার চক্রান্ত করছে।” মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জল চৌধুরি বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় কি অনাথ আশ্রম খুলেছেন? যে যাচ্ছে তাকেই আশ্রমে আশ্রয় দিচ্ছেন!” অরূপবাবুর অভিযোগের উত্তরে সভাধিপতি বলেন, “মালদহের উন্নয়ন তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের কিছু সদস্য বাজেট মিটিং বয়কট করেছিলেন। তাই বাজেট পাস করতে সিপিএমের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল।”
৩৪ আসন বিশিষ্ট মালদহ জেলা পরিষদের কংগ্রেসের এক সদস্য মৃত, কংগ্রেসের এক সদস্য ও আরএসপি-র এক সদস্য বিধায়ক হয়ে যাওয়ায় দু’টি আসন শূন্য। মোট ফাঁকা আসন ৩। মোট ৩১টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ১৬, তৃণমূল কংগ্রেসের ১, সিপিএমের ১৩, সোশ্যালিস্ট পার্টির ১টি আসন। অরূপবাবু তৃণমূল কংগ্রেসে চলে গেলে এবং তাঁর সদস্যপদ খারিজ হলে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫। বামফ্রন্টের মিলিত ১৪ আসনের থেকে মাত্র ১টি বেশি।
পাশাপাশি ২৯ আসন বিশিষ্ট মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতিতে রয়েছে কংগ্রেসের ১৫, সিপিএমের ১২, সিপিআইয়ের ১, বিজেপির ১। একক সখ্যাগরিষ্ঠ থাকার ফলে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেস দখল করেছিল। কয়েকদিন আগে কংগ্রেসের দু’জন কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। অরূপবাবুর দাবি মতো কংগ্রেসের ৮ জন সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত। |