হাল বেহাল মেডিক্যালে
পরিষেবা ফিরছে শিলিগুড়ি হাসপাতালের
ত সাত মাসে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের হাল কিছুটা ফিরেছে। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। বুধবার দুটি হাসপাতাল পরিদর্শনের পরে এমনই উপলব্ধি বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রতিনিধিদের। দুটি হাসপাতালেরই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পাশাপাশি, জেলা হাসপাতালটি বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিধানসভা এলাকায়। হাসপাতালের পরিষেবার মান উন্নয়নে টিকিট কাউন্টারে রোগীর আত্মীয়দের দাঁড়াবার সুষ্ঠু ব্যবস্থা থেকে বিদ্যুৎ সমস্যা মেটাতে নতুন জেনারেটর কেনা, সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট চালুর ব্যপ্যারে বিশেষ উদ্যোগী হন তিনি। হাসপাতালে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট চালু, হাসপাতাল রং করা, হাসপাতাল চত্বর থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সরানোর মতো বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীও সচেষ্ট হন।
নিজস্ব চিত্র।
একাধিকবার হাসপাতাল পরিদর্শন করে চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মীদের সময় মতো হাজির হওয়ার জন্য কখনও অনুরোধ, কখনও কড়া নির্দেশও দিয়েছেন বিধায়ক এবং মন্ত্রী দু’ জনেই। এ দিন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে চেয়ারম্যান রুদ্রবাবু ছাড়াও ছিলেন অপর ৩ বিধায়ক শশী পাঁজা, নুরুজ্জামান, সুনীলকুমার মণ্ডল। ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের, যুগ্ম অধিকর্তা অরবিন্দবালা, যুগ্ম সচিব নন্দিতা বসু। দুটি হাসপাতাল ঘুরে দেখার পর প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানিয়ে দেন, গত ৭ মাসে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের পরিষেবা অনেকটাই উন্নত হয়েছে। তুলনায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিষেবার মান এখনও আগের মতই। তবে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিষেবা ঠিক করতে তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রবাবু বলেন, “এই কয়েক মাসে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের পরিষেবা অনেকটাই ভাল হয়েছে। পরিষেবা আরও ভাল করা হবে। এখানে সিটি স্ক্যান, এমআরআই, অত্যাধুনিক এক্স-রে পরিষেবা চালু হবে।” সুনীলবাবু, শশীবাবুরা রুদ্রবাবুর কাছে তাঁর বিধানসভা এলাকার এই হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেন। রুদ্রবাবুও জানান এ কারণেই এই হাসপাতাল ঘুরে যেতে তিনি তাঁদের বলেছেন। অন্য দিকে গত ৭ মাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হাল ফেরাতে একাধিকবার পরিদর্শন, রোগী কলাণ সমিতির বৈঠক, পরিচালন সমিতির বৈঠকও করেছেন রুদ্রবাবু, গৌতমবাবু দু’ জনেই। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “জেলা হাসপাতালের হাল ফেরাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের হাল ফেরাতেও চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে সে দিকে আরও বেশি করে নজর দেওয়া হবে।” মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানিয়েছেন, বর্তমানে ৫৯৯ টি শয্যা অনুমোদিত থাকলেও গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। অথচ পর্যাপ্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীর অভাব রয়েছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের তুললায় তাদের রোগীর চাপ বেশি, পরিকাঠামো অনেক বড়। তবে পরিষেবার মান উন্নয়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিন বহির্বিভাগ চলাকালীন চিকিৎসকদের ঘরের মধ্যে মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভদের এবং হাসপাতাল চত্বরে পোস্টার, আবর্জনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। অর্থোপেডিকের বহির্বিভাগে চিকিৎসক সপ্তাহে ৩ দিন আসেন বলে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে জানতে চান। রুদ্রবাবু আগেও হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন। সে সময় ভর্ৎসনাও করেছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পার্থপ্রতিম পানকে। অথচ তা নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে রুদ্রবাবুর এই কাজকে নিন্দা করা হয় বলে তিনি জানতে পেরে স্তম্ভিত হন। প্রশ্নের মুখে পড়ে বিব্রত হাসপাতাল সুপার, অধ্যক্ষরা এ দিন জানান কলেজ কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে তারা ওই বিষয়টি খারিজও করেছেন। নিয়ম মতো বিধায়ক, সাংসদরা যে কোনও সময় হাসপাতাল পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে পারেন, কৈফিয়ত চাইতে পারেন তা জানিয়ে দেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরে পান, সুপারি-সহ কোনও রকম নেশার জিনিস বিক্রি বন্ধ করতে সুপারকে জানিয়ে দেন। পান খেয়ে হাসপাতালে কাউকে ঢুকতে যাতে না দেওয়া হয় তা জানিয়ে দেন নিরাপত্তা রক্ষীদেরও। দেওয়াল থেকে পোস্টার খুলে, নোংরা পরিষ্কার করে হাসপাতাল চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন। কেমোথেরাপি বিভাগে দুই রোগী ওষুধ পাচ্ছে না দেখে তার ব্যবস্থা করতে বলেন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে শয্যা সংখ্যা ২৬৫ টি। এ দিন হাসপাতালের সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটের ভিতরে ঢুকে ঘুরে দেখেন শশী পাঁজা। সেখানকার পরিষেবা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি প্রশংসা করেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব ঠেকাতে জানলায় যে ইনসেক্টিফায়েড ট্রিটেড বেড নেট লাগান হয়েছে সে বিষয়ে তারিফ করেন। ব্লাড ব্যাঙ্ক সংস্কার কাজ চলায় এবং রক্ত পরীক্ষা করার র্যাপিড কিট না থাকায় যে সমস্যা চলছে, তার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করতে বলেছেন রুদ্রবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.