আগুন নিয়ে এখনও ‘খেলছে’ বহু হাসপাতাল
হাসপাতাল চলছে রমরমিয়ে। কিন্তু, অগ্নি-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে।
আমরি-কাণ্ডের পরে কলকাতার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে গিয়ে এমনই সব তথ্য রাজ্য সরকারের হাতে এসেছে। বুধবার মহাকরণে রাজ্যের দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান জানান, রাজ্য সরকারের তৈরি ফায়ার অডিট কমিটি এখনও পর্যন্ত কলকাতার ২৭টি হাসপাতালে সমীক্ষা চালিয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই হাসপাতালগুলির একটিতেও আগুন প্রতিরোধের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এর মধ্যে ১২টি হাসপাতালের সমীক্ষা-ভিত্তিক একটি রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বাকি হাসপাতালগুলির রিপোর্টও দু’এক দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।
গত ৮ ডিসেম্বর রাতে আমরি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯২ জনের মৃত্যু হয়। তার পরে রাজ্যের হাসপাতালগুলির অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ঘটনার দিন সাতেকের মধ্যেই রাজ্য সরকার দমকলের বর্তমান এবং প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ অডিট কমিটি তৈরি করে। ঠিক হয়, ওই কমিটি সারা বছর ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল, শপিং মলগুলির অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে। ফায়ার অডিট কমিটির সমীক্ষায় যা ভুলত্রুটি পাওয়া গিয়েছে, তা সংশোধন করার জন্য ওই কমিটি হাসপাতালগুলিকে ১৫ দিন থেকে ছ’মাস পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। সেই সময়ের মধ্যে নিয়ম মতো অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে না-পারলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এ দিন মহাকরণে জাভেদ খান বলেন, “ওই হাসপাতালগুলির কোনওটিতেই বিধিমাফিক অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। তাদের ১৫ দিন থেকে ছ’মাস সময় দেওয়া হয়েছে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”
ওই সময়সীমার মধ্যে কাজ না-হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সরকারের তরফে? মন্ত্রীর উত্তর, “প্রক্রিয়াটি নিরন্তর। হাসপাতালগুলি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ না-করলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রয়োজনে জরিমানা থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত হতে পারে। এমনকী, নেওয়া হতে পারে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও।” তিনি আরও বলেন, “কলকাতায় প্রচুর হাসপাতাল রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই যে সব সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে যাবে, এমন নয়। সারা বছর ধরেই এই সমীক্ষার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
স্টিফেন কোর্ট-কাণ্ডের পরে শহরের পুরনো বড় বাড়ি এবং বাজার এলাকাগুলিতে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য পুরসভা একটি কমিটি তৈরি করে। তবে আমরির ঘটনার পরে ফায়ার অডিট কমিটির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, শহরের নতুন তৈরি অনেক হাসপাতালেই পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। দমকলমন্ত্রী জানিয়েছেন, উডল্যান্ডস্, বেলভিউ, অ্যাপোলো, নাইটিঙ্গেল, ফর্টিস, জেনেসিস, রুবি জেনারেল, ডিসানের মতো বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি সমীক্ষা চালানো হয়েছে এসএসকেএম, শম্ভুনাথ পণ্ডিতের মতো সরকারি হাসপাতালেও। দমকলমন্ত্রী বলেন, “বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলিতে প্রশস্ত জায়গা রয়েছে। তাই সে সব জায়গায় দমকলের গাড়ি ঢোকার রাস্তা বা চওড়া সিঁড়ি না-থাকার সমস্যা নেই। অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে জলাধারও রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্রগুলি। সেগুলি অবিলম্বে ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.