নিজস্ব সংবাদদাতা • বীরপাড়া |
টানা ১০ বছর অন্ধকারে কাটানোর পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উদ্যোগে ঢেকলাপাড়া বাগানের শ্রমিক বসতির বকেয়া বিল বাবদ দেড় লক্ষ টাকা ছাড় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বিদ্যুৎ পর্ষদ। সেই সঙ্গে গৌতমবাবুর অনুরোধে চলতি সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিকদের ঘরে বিদ্যুৎ পৌছনোর কাজ শুরু হবে। গৌতমবাবু বলেন, “বিদ্যুৎ না-থাকায় শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েছেন। বাগানের বকেয়া বিল মকুব করার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছিল। তিনি বিল মকুব করেছেন। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে বাগানের শ্রমিক বসতি এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছে যাবে।”
২০০২ সালের অগস্ট মাস থেকে ঢেকলাপাড়া বাগান বন্ধ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগানের বকেয়া দেড় লক্ষ টাকা বিল না মেলায় ওই বছর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পর্ষদ। এর পর থেকে বিকেলের পরে অন্ধকারে ডুবে থাকে বাগান এলাকা। ওই সুযোগে বান্দাপানি জঙ্গল থেকে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালাতে শুরু করে। অন্ধকারে ঘরের বাইরে বের হলে হাতির পায়ের তলায় পড়ে মরতে হবে ওই ভয়ে গুটিয়ে থাকেন শ্রমিকরা। এ দিকে হাতির দল নুন ও চালের লোভে একের পর এক বাড়িতে হানা দিতে শুরু করে। এলাকার শ্রমিকরা জানান, ইতিমধ্যে হাতি ৩০টি বাড়ি ভেঙেছে। সোমবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বাগান এলাকা পরিদর্শনের সময় শ্রমিকরা চরম অভাবের পাশাপাশি বিদ্যুৎ না-থাকায় হাতির হানা বেড়ে যাওয়ার ঘটনার কথা জানান। শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানে যতদিন বিদ্যুৎ ছিল হাতির এমন উপদ্রবের মুখে পড়তে হয়নি। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর থেকে প্রতিদিন এলাকায় ঘর ভাঙছে। অনেক আবেদন নিবেদন করার পরে দু’বছর আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল পর্ষদ। কিন্তু হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যায়। পর্ষদ থেকে জানানো হয়, বকেয়া বিল না-মেটানো পর্যন্ত বাগানে বিদ্যুৎ পৌছনো সম্ভব হবে না। দেড় লক্ষ টাকার জন্য বাগানে বিদ্যুৎ আসছে না শুনে মন্ত্রী বলেন, “ঠিক করেছিলাম নিজে উদ্যোগ নিয়ে টাকা জোগাড় করে বকেয়া বিল মেটাবো। কিন্তু তার আগে সমস্যার কথা জেনে বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বকেয়া টাকা মকুব করার কথা জানান। তাই এখন আর কোনও সমস্যা রইল না।”
মন্ত্রীর এই উদ্যোগে খুশি বাগানের শ্রমিকরা। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ঢেকলাপাড়া বাগান ইউনিটের নেতা বসন্ত তাঁতি বলেন, “গৌতমবাবু যে ভাবে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেটা আগে কখনও দেখিনি। বিদ্যুৎ এলে হাতির ভয়ে আর ঘরে বসে থাকতে হবে না।” বিদ্যুৎ পর্ষদের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের বাস্তুকার ফিরোজ আখতার খান বলেন, “বিল বকেয়া থাকায় এতদিন ওই বাগানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। বকেয়া বিল মুকুবের নির্দেশ এলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।” |