চা পর্ষদ সদস্যদের ভূমিকায় প্রশ্ন
গৌতমের, জবাবে পাল্টা দিলেন শঙ্কর
চা শিল্পের সমস্যার সমাধান নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তরজায় জড়িয়ে গেলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তৃণমূলের গৌতম দেব এবং মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। মঙ্গলবার মাটিগাড়ায় তরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টিপা) বার্ষিক সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ভারতীয় চা পর্ষদে উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচিত ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। চা শিল্পের উন্নতির জন্য টি বোর্ডের ওই সদস্যরা কখনই রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা অথবা কোনও প্রস্তাব জমা দেননি বলেও দাবি করেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমি অন্তত জানি না উত্তরবঙ্গ থেকে চা পর্ষদে নির্বাচিত ওই সদস্যদের ভুমিকা কী? অথচ ডুয়ার্সের চা শিল্প রীতিমতো সঙ্কটে পড়েছে। এই ব্যাপারে কোনও সমীক্ষা করে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া যেতে পারত। কিছুই হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে উত্তরবঙ্গে একটি টি ডিরেক্টরেট তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও গৌতমবাবু জানান। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ থেকে যে তিন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা চা পর্ষদের সদস্য তাঁরা হলেন দার্জিলিং জেলা আইএনটিইউসি সভাপতি অলক চক্রবর্তী, মাটিগাড়া-শিলিগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এবং আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বক্তব্য পেশের সময়ে মঞ্চেই বসেছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্করবাবু। দর্শকাসনে বসেছিলেন আইএনটিইউসি’র জেলা সভাপতি। অনুষ্ঠানের শেষে শঙ্করবাবু বলেন, “চা পর্ষদের একটি নির্দিষ্ট সংবিধান রয়েছে। একটি কর্মপদ্ধতিও রয়েছে। সেভাবেই চা শিল্পের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে কাজ হয়নি। প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকারের পরামর্শ চাওয়া হবে। আর কে, কী বলল তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।” শঙ্করবাবু বক্তব্য পেশের আগেই মঞ্চ থেকে নেমে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তা সত্বেও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর নামোল্লেখ না-করে ক্ষুব্ধ শঙ্করবাবু বলেন, “আমাদের একটি রেওয়াজ আছে, মন্ত্রী না-এলে অনুষ্ঠান শুরু হয় না। মন্ত্রী এলেই ফুলের মালা দিতে হয়। এসব বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মন্ত্রী মানেই তিনি সব জানেন না।” চা শিল্পের সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে নয়া রাজ্য সরকারের কাছে খুব বেশি আশা করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ রেখে গিয়েছে। নয়া সরকার ওই ঋণ সামলাতে ব্যস্ত। এখনই এই সরকারের কাছে কিছু আশা ভুল হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষে নতুন কিছু করা এখনই সম্ভব নয়।”
আইএনটিইউসি জেলা সভাপতি অলক চক্রবর্তীও জানান, নতুন মন্ত্রিসভা বলেই এখনই চা পর্ষদের সদস্য হিসাবে তাঁরা কোনও প্রস্তাব দেননি। তবে পূর্বতন সরকারের কাছে পর্ষদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই সরকারকেও পরে নিশ্চয়ই প্রস্তাব দেওয়া হবে। টিপার চেয়ারম্যান সঞ্জয় ঘোষাল অবশ্য এদিন বক্তব্য পেশের সময়ে জানান, তরাই ও ডুয়ার্সে চা শিল্পের সঙ্কট মোচনে চা পর্ষদ নানা কাজ করছে। তিনি বলেন, “উৎপাদন ব্যয়ের ৫৫ শতাংশ শ্রমিকদের মজুরি দিতে খরচ হচ্ছে। সামাজিক উন্নয়নের ব্যয়ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সামাজিক উন্নয়নের দায়িত্ব নিতে হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে উদ্যোগী হবেন এই আশা করছি।” সিসিপিএ-র কর্তা মনোজিৎ দাশগুপ্ত জানান, তরাই ও ডুয়ার্সের বহু চা বাগানের লিজ নবিকরণ হয়নি। চা বাগান মালিকদের ৬০ শতাংশ কৃষি আয়কর দিতে হচ্ছে।” টিপার অন্যতম উপদেষ্টা কে কে মিন্ত্রির প্রস্তাব দেন চা শিল্পকে শিল্প ও বাণিজ্য দফতর থেকে কৃষি দফতরের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.