বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ রাজ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হলে কী ধরনের আইনকানুন মানতে হবে, রাজ্য সরকার শীঘ্রই তা চূড়ান্ত করবে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এই সংক্রান্ত বিল বিধানসভায় পেশ হবে বাজেট অধিবেশনে।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই সংক্রান্ত আইনকানুনের একটি খসড়া তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর চূড়ান্ত মতামত পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
বাম আমলের শেষ দিকে রাজ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। একটি নামী শিল্পগোষ্ঠী প্রয়াত শিল্পপতি ধীরুভাই অম্বানীর নামে তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রস্তাব দেয়। ২০১০ সালে এই সংক্রান্ত আইনও তৈরি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কল্যাণীতে ৫০ একর জমিও চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু সেই প্রকল্প এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে রাজ্যের নয়া সরকারের আগ্রহের কারণ কী? উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে যে টাকার প্রয়োজন, সরকারের ভাঁড়ারে তা নেই। সেই কারণেই বেসরকারি উদ্যোগকে বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।” তবে ওই কর্তা এ-ও জানান, মুখ্যমন্ত্রী চান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শিল্পের উপযোগী মেধাসম্পদ তৈরি হোক। সেই দিকটি খেয়ালে রেখেই পঠনপাঠনের বিষয় ও পাঠ্যক্রম ঠিক হবে।
রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব সতীশ তিওয়ারি বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কোনও প্রস্তাব এই মুহূর্তে নেই। কিন্তু একটা মডেল আইন না থাকলে তো কেউ উৎসাহিত হবে না। তাই রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।” দফতর সূত্রের খবর, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে হলে কী কী শর্ত মানতে হবে, তার নিয়মকানুন কী হবে---মডেল আইনে তাই নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রস্তাব এলে এবং রাজ্য সরকার তাতে সম্মতি দিলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৃথক আইন তৈরি হবে। অসম, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে নির্দিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন আছে। বাম আমলেও একটি আইন তৈরি হয়েছে। নতুন সরকার খসড়া তৈরির সময় ওই আইনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ব্যাপারে একটি খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদকে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কোনও প্রস্তাব এলে উচ্চশিক্ষা সংসদই সেটি খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠাবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মার্জিত বুধবার বলেন, “সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মডেল আইন থাকবে।” তাঁর কথায়, ‘‘খসড়া চূড়ান্ত হলে বিধানসভায় বিল আনা হবে।” |