|
|
|
|
সময় বাঁচাতে ‘প্রকল্প-ব্যাঙ্ক’ তৈরির নির্দেশ বিডিওদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
টাকা পেলেই কাজ শুরু করতে হবে। উন্নয়নের কাজে কোনও ঢিলেমি করা যাবে না। এই পরিকল্পনা নিয়ে হাঁটতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তাই প্রতিটি ব্লকের উন্নয়ন আধিকারিকদের ২ কোটি টাকার ‘প্রকল্প-ব্যাঙ্ক’ আগেভাগে তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। যাতে অর্থ পেলেই কাজ শুরু করে দেওয়া যায়। প্রকল্প তৈরির জন্য যেন অহেতুক সময় নষ্ট না হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “উন্নয়ন-কাজ ত্বরান্বিত করতেই প্রকল্প-ব্যাঙ্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
এত দিন উন্নয়ন পরিকল্পনা ছিল অন্য রকম। বাজেটে অর্থ বরাদ্দের পরে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হত। অথবা কোনও জরুরি কাজের জন্য প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে অর্থ চাওয়া হত। প্রশাসন জানিয়েছে, আগের সেই পদ্ধতি অনুযায়ী এখনও কাজ চলবে। পাশাপাশি, বিডিওরা অতিরিক্ত ২ কোটি টাকার ‘প্রকল্প-ব্যাঙ্ক’ তৈরি করে রাখবেন। কোথায় পানীয় জলের প্রকল্প প্রয়োজন, কোথায় সেচবাঁধ তৈরি করতে হবে, কোথায় রাস্তা সংস্কার প্রয়োজন---তা ঠিক করে ওই সব প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ও প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে প্রশাসনের নির্দেশ, বিভিন্ন দফতরের কাজের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলতে হবে। যে কারণে প্রতিটি দফতরকেই জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দফতরে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতেও বলা হয়েছে। ফলে কোনও কাজ নিয়ে তথ্যের ঘাটতি থাকবে না। অন্য দিকে, বিডিও-রা প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি রাখলে হাতে টাকা এলেই কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। বিভিন্ন দফতরের তথ্য হাতে থাকলে প্রকল্পের অগ্রাধিকার ঠিক করতে সুবিধা হবে। ‘প্রকল্প-বাঙ্ক’ থাকলে জেলার উন্নয়নে গতি আসবে বলেই প্রশাসনিক কর্তাদের অনুমান। কারণ, ব্যাঙ্ক তৈরি করতে হলে এলাকার পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক-স্তরে যে একাধিক দফতর রয়েছে সেই সব দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে সমন্বয়ও বাড়বে। প্রতিটি দফতর, জনপ্রতিনিধি ও এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা না বললে প্রকল্প তৈরি করা কঠিন। আলোচনার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি করা হলে তা নিয়ে বিতর্ক যেমন থাকবে না তেমনই কোন প্রকল্প কতটা জরুরি তা-ও জানা যাবে। এমনিতে রাজ্যে সরকার বদলের পর বেশ কিছু কমিটি করা হয়েছে প্রতিটি-স্তরেই। ব্লক স্তরে বিডিও-দের সমন্বয় সাধনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের কাজ কেমন চলছে তা দেখার জন্য জেলা-স্তরেও মনিটরিং কমিটি রয়েছে। যার প্রধান জেলাশাসক। প্রতি মাসেই ওই কমিটির বৈঠক হয়। সেখানেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে। অর্থাৎ তৃণমূল-স্তর থেকেই উঠে আসা প্রকল্প জেলাস্তরে পর্যালোচনায় স্থান পাবে। জেলা থেকে পরিকল্পনা যাবে রাজ্যে। হঠাৎ করে কোনও খাতে টাকা এলে তা কী ভাবে খরচ হবে, তা নিয়ে কাউকে মাথা ঘামাতে হবে না। আবার কোটি কোটি থাকা পড়ে থাকারও সম্ভাবনা কম। এই ঘটনা আগে প্রায়ই ঘটেছে। বছরের পর বছর ধরে অর্থ পড়ে থেকেছে, অথচ উন্নয়ন-কাজ হয়নি!কী ভাবে কাজ হবে, কোন দফতর কাজ করবে, কোথায় সেই কাজ করা হবে--এ সব নিয়ে বিতর্ক ও টালবাহানাতেই টাকা খরচ করা যায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু ‘প্রকল্প-ব্যাঙ্ক’-এ এই ধরনের সমস্যাই থাকবে না। সে ক্ষেত্রে উন্নয়ন-কাজ ত্বরান্বিত হবে বলেই দাবি জেলা প্রশাসনের। |
|
|
|
|
|