জুনিয়র জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতা বি সি রায় ট্রফির প্রথম ম্যাচে বাংলার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটল! বুধবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে পঞ্জাবের সঙ্গে তাদের প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ভাবে ড্র হয়েছে। তাতে বাংলার ফুটবলারদের উপর স্নায়ূর চাপ বেড়েছে। লিগের পরের ২ টি ম্যাচ জেতা তাদের জরুরি হয়ে পড়েছে। ভাগ্য বিপর্যয় এ কারণেই, এ দিন প্রায় দুই ডজন ‘কর্নার কিক’ পেয়ে একটিও কাজে লাগাতে পারেননি বাংলার ফুটবলাররা। শুধু তাই নয়, বার তিনেক গোল পোস্টের মুখ বাধাহীন পেয়েও জালে বল জড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন সায়ন দত্ত, সুভাষ ওঁরাওদের মতো ফুটবলাররা। অন্তত ৩টি শট বারে লেগে ফিরেছে। তাতে গত বারের রানার্স দল বাংলা এ বার শেষ পর্যন্ত কতটা সুবিধা করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। দলের ফুটবলারদের এই পারফরম্যান্স ভাবিয়ে তুলেছে কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তীকেও। খেলার পর স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এমন হলে তো সত্যিই বলার কিছু নেই। এ দিনের ম্যাচে গোটা খেলায় আমাদের ফুটবলাররা আধিপত্য করেছে। অথচ একটা স্কোরও হল না। দুই ডজন কর্নার কিক পাওয়া মানে বিপক্ষের উপর কী পরিমাণ চাপ তারা সৃষ্টি করেছিল ভাবুন! অথচ তার ফলাফল শূন্য। প্রাথমিক পর্বে লিগের আরও ২ টি খেলা রয়েছে। ড্র করে এ দিন ১ পয়েন্ট সংগ্রহ হল বটে কিন্তু বাকি দু’টি খেলাতেই আমারা জিততে চাই।” |
আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, একেক দিন যায়, যখন ভাগ্যও বিমুখ থাকে। পরের ম্যাচগুলিতে এমনটা হবে না বলেই তিনি আশাবাদী। এ দিন শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী পঞ্জাবকে চাপে রাখে বাংলা। ক্রমাগত আক্রমণে উঠে এসেছে বাংলার সায়ন, ফৈয়াজ আলিরা। একটা সময় এমনও হয়েছে বিপক্ষের প্রায় সমস্ত খেলোয়াড়কে ডিফেন্স সামলাতে হচ্ছে। তার পরেও বাংলার ফুটবলারদের একটা গোল করতে না পারাটা চিন্তায় ফেলেছে কোচ থেকে দলের কর্মকর্তাদেরও। প্রথম ধাপে সুভাষ ওঁরাও গোল ফাঁকা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। সায়ন এবং ফৈয়াজরাও আলাদা ভাবে এমন সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে সফল হননি। দুই জনে মিলেও সুযোগ পেয়েছিলেন। ফাঁকা গোলে কে শট করবে পারষ্পরিক সেই বোঝাপড়ার অভাবে সে যাত্রাও সুযোগের সদব্যবহার তাঁরা করতে ব্যর্থ হন। অন্য দিকে কর্নার শটগুলি ছিল দুর্বল। কর্নার থেকে গোলের মুখ খুলতে তাই ব্যর্থ হতে হয় বারবার। ১৬ টি দলকে ৪ টি ক্লাস্টারে ভাগ করে লিগের প্রাথমিক পর্বের খেলা হচ্ছে। প্রতিটি দল ৩ টি করে ম্যাচ খেলবে। প্রতিটি ক্লাস্টার থেকে ১ টি করে দল মূলপর্বে রাউন্ড রবিন লিগে খেলবে। সি-ক্লাস্টারে বাংলা, পঞ্জাবের সঙ্গে রয়েছে মহারাষ্ট্র, মেঘালয়। ২০ জানুয়ারি রানিডাঙায় এসএসবি মাঠে বাংলা মুখোমুখি হবে মহারাষ্ট্রের। ২২ জানুয়ারি মেঘালয়ের সঙ্গে খেলা বাংলার। এ দিন মেঘালয় ৪-০ গোলে হারিয়েছে মহারাষ্ট্রকে। অন্য দিকে গত বারের চ্যাম্পিয়ন চণ্ডীগড়কে ৫-১ গোলে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড। জয়ী দলের হয়ে কুমার উদন্ত সিংহ ৪ টি গোল করেছেন। অপর গোলটি করেছেন দীনেশ ভকত। চণ্ডীগড়ের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন অভিজিৎ কাটারিয়া। তাদের এ-ক্লাস্টারে রয়েছে তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ। এ দিন তামিলনাড়ুকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ। বৃহস্পতিবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ক্লাস্টার ডি’র কর্ণাটক-অসম এবং মণিপুর-দিল্লির দুটি ম্যাচ হবে। রানিডাঙা এসএসবি’র মাঠে ক্লাস্টার বি’র গোয়া-মিজরাম, উত্তরাখণ্ড-ওড়িশার ম্যাচ। এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে জাতীয় প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচ মেঘালয়-মহারাষ্ট্রের খেলার শুরুতে বলবয়, চিকিৎসক, অ্যাম্বুল্যান্স সময় মতো মাঠে না-পৌঁছলে তা নিয়ে হইচই পড়ে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যা মিটে যায়। ম্যাচ রেফারি মাধব জি সুবর্ণ অবশ্য জানিয়েছেন, প্রথম দিন বলেই, এ সব ছোটখাট সমস্যা হয়ে থকে। তবে প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে তাঁরা খুশি। |