পাল্টা আক্রমণের জন্য আর অপেক্ষা নয়। আজ বৃহস্পতিবার স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলার কথা ঘুরছে সুব্রত ভট্টাচার্যর মাথায়। ফোনে গোয়া থেকে মোহন টিডি বলে দিলেন, “শুরু থেকেই আমরা গোলের জন্য চেষ্টা করব। তারপর প্রয়োজন হলে অন্য কথা ভাবা যাবে।”
সুব্রত-ওডাফারা আজ গোয়ার মাঠে নামছেন মূলত দুটো লক্ষ্য সামনে রেখে।
এক) জিততে পারলে ইস্টবেঙ্গলকে টপকে ফের তিন নম্বরে চলে যেতে পারবেন ব্যারেটোরা।
দুই) বহু দিন পর গোয়া থেকে পরপর দু’ম্যাচে জিতে ছয় পয়েন্ট নিয়ে ফেরার সুযোগ। সুব্রতর সঙ্গে কথা বলে মনে হল, দ্বিতীয় লক্ষ্যটিকেই সবার আগে রাখতে চাইছেন তিনি। “গোয়া থেকে দু’টো ম্যাচে ছয় পয়েন্ট পেলে পরের দিকে সুবিধা হবে। লিগ টেবিলে তো ওঠানামা চলবেই। এখন শুধু পয়েন্ট কুড়িয়ে যেতে হবে।” বিকেলে মারগাও ফাতোরদা স্টেডিয়ামে সালগাওকর-হ্যাল খেলা দেখতে দেখতে ফোনে বলছিলেন সুব্রত।
ইস্টবেঙ্গলের পর চার্চিল ব্রাদার্স। লিগ টেবিলে চ্যাম্পিয়নের দৌড়ে থাকা দুটি দলকে মোহনবাগান হারিয়েছিল প্রতিআক্রমণের জালে বন্দি করে। ওডাফা ছিলেন একমাত্র স্ট্রাইকার। স্পোর্টিং ক্লুবের বিরুদ্ধে সেই ভাবনায় বদল হতে পারে। সুব্রত যা অনুশীলন করিয়েছেন তাতে কালু-মোগাদের বিরুদ্ধে মডাফা-ব্যারেটো জুটিই হয়তো শুরু করবেন। আক্রমণের ঢেউ তোলার জন্য। মোহনবাগান চাইছে, শুরুর দিকে গোল তুলে নিতে। |
ব্যারেটোকে পেলেও জুয়েল রাজাকে পাচ্ছে না মোহনবাগান। অসীম বিশ্বাসও আসেননি অসুস্থতার জন্য। গৌরাঙ্গ দত্তেরও কার্ড আছে। ফলে মাঝমাঠ নিয়ে চিন্তিত মোহনবাগান। সুরকুমারের পারফরম্যান্সেও খুশি নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। কিংশুক, আনোয়ার, রহিম নবির সঙ্গে কাকে খেলানো হবে তা নিয়ে চিন্তায় সুব্রত। মাঝমাঠে রাকেশ মাসি, হাদসন লিমা বা জেলেনির মধ্যে একজন খেলছেনই। বাকি দু’জন কাকে নামানো হবে তা নিয়েও সবুজ-মেরুন শিবিরে নানা অঙ্ক চলছে।
স্পোর্টিং ক্লুবের সঙ্গে প্রথম পর্বে যুবভারতীতে জেতার অবস্থায় পৌঁছেও ম্যাচ ড্র করেছিলেন ব্যারেটোরা। শেষ মুহূর্তে কিংশুকের হাতে লেগে পেনাল্টি পায় ক্লুব। সে জন্যই শক্তিশালী দুটো টিমকে হারানোর পরও সুব্রত আত্মতুষ্টিতে ভুগতে দিতে চান না নবি-মাসিদের। বলছিলেন, “এ বারের লিগে প্রচুর ওঠানামা হবে। অনেক অঘটনও ঘটবে। তাই কে উঠছে, কে নামছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। কালও আমাদের লক্ষ্য প্রথমে তিন পয়েন্ট। পরে এক। অর্থাৎ কিছুতেই হারা চলবে না।”
সুব্রত তিন পয়েন্টের জন্য চূড়ান্ত আক্রমণের রাস্তায় যাওয়ার কথা ভাবলেও তাকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছেন না স্পোর্টিং ক্লুবের টিডি অ্যালেক্স আলভারেজ। বলে দিলেন, “নিজেদের মাঠে আমরা সুবিধাজনক অবস্থাতেই আছি। জানি কী ভাবে মোহনবাগানকে আটকাতে হয়।”
পৈলান অ্যারোজের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে ম্যাচ জিতেছিল ক্লুব। সেই একই দল নামাচ্ছে গোয়ার ক্লাবটি। অ্যালেক্স বললেন, “পৈলানের বিরুদ্ধে আমরা প্রচুর গোল নষ্ট করেছিলাম। ব্যবধান আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।” ক্লুবের অবশ্য লিগ টেবিলে হাল একেবারেই ভাল নয়। মোহনবাগানের চেয়ে দশ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। চার্চিল-বধের পরে এখন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছেন ব্যারেটোরা। তাই ঘরের মাঠে খেলা হলেও মোহনবাগানকে হারানো যে সহজ হবে না, সেটা ভাল মতোই জানেন স্পোর্টিং কোচ একেন্দ্র সিংহ। বৃহস্পতিবার জেমস মর্গ্যানের পাশে নতুন আসা কোরিয়ান স্ট্রাইকার পার্ক জে হু-কে নামাতে পারে স্পোর্টিং। একেন্দ্র বলেন, “আমার দলে কোনও চোট-আঘাতের সমস্যা নেই। ছেলেরা মোহনবাগান ম্যাচ খেলার জন্য মুখিয়ে আছে। আশা করছি তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ব।”
|