|
|
|
|
বন্ধ ঘরে সিলিন্ডার ফেটে জখম চার সন্তান-সহ দম্পতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সাত বাই দশ ফুটের একটা ঘর। ঘরে একটি করে দরজা-জানলা। শীতের সকালে সেগুলিও ছিল বন্ধ। ভিতরে সিলিন্ডার ফেটে গুরুতর জখম হলেন স্বামী-স্ত্রী সহ চার ছেলেমেয়ে।
বুধবার সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে বালির চাঁদমারির নেতাজিনগরে। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পবনকুমার ঠাকুর (৪৩), তাঁর স্ত্রী মেনকা ঠাকুর (৩৪)-সহ তাঁদের চার ছেলেমেয়ে শ্বেতা (১০), সোহিনী (৭), শালিনী (৯) এবং আদর্শ (৮)। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মেনকাদেবী ও আদর্শের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘিঞ্জি বাজার এলাকায় সাতসকালে এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় ও ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ জানায়, নেতাজিনগরে একটি দোতলা বাড়ির একতলায় পরপর চারটি ঘরে ভাড়া থাকেন চার পরিবার। বাড়ির মালিক রাজু সিংহ থাকেন দোতলায়। বছরখানেক আগে একতলায় সপরিবার ভাড়া আসেন হাওড়া স্টেশন এলাকার একটি হোটেলের গাড়িচালক পবনকুমার। |
|
সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চুরমার জানলার কাচ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ জানায়, এ দিন মেনকাদেবী সম্ভবত চা করতে গিয়ে ওভেন জ্বালান। তখনই কোনও ভাবে সিলিন্ডার থেকে বেরোনো গ্যাসে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়। ঘরেও আগুন লাগে। স্থানীয়েরা জানান, বিস্ফোরণে ঘরের বন্ধ জানলা ভেঙে যায়। ভেঙে পড়ে আশপাশের বাড়ির জানলার কাচও। লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। পুলিশের অনুমান, ওই পরিবারের সকলে জেগে গিয়েছিলেন। তাই প্রতিবেশীরা ওঁদের সহজে উদ্ধার করতে পেরেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী রতন রাও বলেন, “সকালে বিস্ফোরণের শব্দে গিয়ে দেখি, পবনের ঘরে আগুন গোলার মত পাক খাচ্ছে। গায়ে আগুন ধরা অবস্থায় বেরিয়ে আসছে পবন।” ওই বাড়ির এক ভাড়াটে দর্শন রায় বলেন, “আমি পাশের ঘরেই থাকি। বিস্ফোরণে আমিও কেঁপে উঠি। দেখি পবনের ঘর থেকে আগুন বেরিয়ে আসছে। কী ঘটেছে বুঝতে পেরে চিৎকার করে সকলের সাহায্য চাই। এর পরে সবাই মিলে ওঁদের আহত অবস্থায় ঘর থেকে বার করি।”
এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সিলিন্ডারটি বাড়ির বাইরে রাখা। ঘরের ভিতর গ্যাস ওভেনে তখনও একটি বাটি বসানো। ভিতরে আধপোড়া বিছানা, জামাকাপড়। স্থানীয়েরা জানান, তাঁরাই বালতি করে জল দিয়ে আগুন নেভান। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসে। পবনবাবু ও তাঁর স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের উদ্ধার করে প্রথমে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে, পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানায়, সম্ভবত সিলিন্ডারের ভিতর ‘ভাল্ভ’ ফেটে গিয়ে গ্যাস লিক করেছে। সেই গ্যাস ঘরের বন্ধ দরজা-জানলা দিয়ে না বেরোতে পারায় ভিতরেই জমে ছিল। ওভেন ধরানোর জন্য দেশলাই জ্বালাতেই বিস্ফোরণ হয়। তবে সিলিন্ডারটির ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|