|
|
|
|
মণিপুর |
নির্বাচন শিয়রে, প্রার্থীদের হাবভাবে বোঝার উপায় নেই |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
কে বলবে ভোটের আর মাত্র ১০ দিন বাকি! প্রচারের জন্য হাতে ৮ দিন। মণিপুর জুড়ে কানফাটানো ভোট প্রচার তো দূরের কথা, জঙ্গি আক্রমণের ভয়ে প্রার্থীরা দল বেঁধে বের হতেই নারাজ। তারকাদের নিয়ে প্রচার চালাবার জন্য সব দলই নির্বাচন কমিশনকে তালিকা জমা দিয়েছিল। তালিকায় মনমোহন সিংহ, সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, বৃন্দা কারাট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন রয়েছেন, তেমনই আছেন হেমা মালিনি, স্মৃতি ইরাণিরা। কিন্তু জঙ্গি হুমকি ও শীতে কাবু মণিপুরকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভোট শিয়রে।
মণিপুরের নামী-দামি প্রার্থীরা নির্বাচনে জেতার ক্ষেত্রে বরাবরই মা লক্ষ্মীর শরণ নেন। যে যত টাকা ছড়াবেন, তিনি ততই ভোট টানবেন এই ছিল ভোটতত্ত্ব। কিন্তু এ বছর নির্বাচন কমিশনের চোখ-কান হয়ে পরিদর্শক, মাইক্রো-পরিদর্শক, আয়কর অফিসাররা এতই সজাগ, যে প্রার্থীরা কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না। বাহুল্য নেই, আড়ম্বর নেই। জনসভা ভরাবার জন্য বাসের কনভয় নেই। যে যার কেন্দ্রে ‘ভালমানুষ’-এর মতোই প্রচার চালাচ্ছেন। এরমধ্যেই কিঞ্চিৎ উষ্ণতা সঞ্চার করতে আগামী কাল ইম্ফল হাজির হবেন বিজেপি সাংসদ হেমামালিনী। হেমা বিভিন্ন এলাকায় চারটি সভা করবেন। বিজেপি-র অপর নেত্রী স্মৃতি আসছেন আগামী মঙ্গলবার। তিনি গোটা তিনেক সভা করতে পারেন।
কংগ্রেস প্রার্থীদের হাল সবচেয়ে শোচনীয়। সাতটি জঙ্গি সংগঠন এক যোগে কংগ্রেস প্রার্থী ও কর্মীদের মারার হুমকি দিয়েছে। তা ফাঁকা আওয়াজ নয়। প্রতিদিন গড়ে ৫ জন কংগ্রেস কর্মী, নেতার বাড়িতে গ্রেনেড পড়ছে। অপহৃত হয়েছেন দু’জন। তাই ব্যানার-হোর্ডিং-পোস্টারের পথে না হেঁটে কেবল নিজের বাড়ি আর কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে পতাকা তুলেই ক্ষান্ত কংগ্রেসী নেতারা। লাউড-স্পিকারের গর্জনও নেই। প্রার্থীরা মানুষের বাড়ি গিয়ে গিয়েই ভোট চাইছেন। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সনিয়া, রাহুলের আসার আশা বিশেষ নেই। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা বললেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের অন্য কোনও বড় মন্ত্রী আসবেন কী না তাও নিশ্চিত নয়।
বন্ধ-অবরোধ ও মূল্যবৃদ্ধির লড়াইয়ে এ বছর নির্বাচনী প্রচারে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি অনেকটাই পিছনে। বিরোধীদের সব নির্বাচনী সভায় চানু ও আফস্পা প্রসঙ্গে কেবল ছুঁয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আগের নির্বাচনগুলিতে দরিদ্র জনতার মূল আকর্ষণ ছিল: নেতাদের টাকায় ভুরিভোজ। এ বার নির্বাচন কমিশনের চোখ রাঙানিতে সে গুড়েও বালি। মণিপুর এমনিতে ‘ড্রাই স্টেট’। বিলিতি সুরার দাম চড়া। নির্বাচনের কল্যাণে বিনামূল্যে সুরা ও মাংস-ভাত পেটে পড়ত। কিন্তু মদের পসরা গোপন আড়তে আর মাংস দোকানেই পড়ে রয়েছে। গণ ভোজ না থাকায় গ্রাম্য মণিপুরের বড্ড মন খারাপ! |
|
|
|
|
|