চিঠি পলিটব্যুরোকে
দুর্নীতি প্রশ্নে চার্জশিট দায়ের হলে ইস্তফা, স্পষ্ট জানালেন ভিএস
দুর্নীতি-প্রশ্নে প্রকাশ কারাটদের উপরে আরও ‘চাপ’ বাড়ালেন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা অশীতিপর সিপিএম নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন। বেআইনি ভাবে নিজের আত্মীয়কে জমি পাইয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে, সেই মামলায় চার্জশিট দায়ের হলে কেরলের বিরোধী দলনেতার পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়াতে চান বলে এ বার সিপিএমের পলিটব্যুরোকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিলেন ভি এস। কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলাকালীনই ভি এস চিঠি দিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোপুরি ‘সাজানো’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তবুও অভিযোগের তদন্ত চলাকালীন ‘নীতিগত ভাবে’ তিনি বিরোধী দলনেতার পদে থাকতে চান না।
বস্তুত, কেরলের ভিজিল্যান্স ও দুর্নীতি দমন শাখায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেই ভি এস দলের সাধারণ সম্পাদক কারাটকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দিতে চান। কিন্তু কারাট তাঁকে নিরস্ত করেন। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যায়, দুর্নীতি-প্রশ্নে ভি এস পদত্যাগ করলে রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে পিনারাই বিজয়নকেও সরে দাঁড়ানোর কথা বলতে হত কারাটকে! ভি এসের পদত্যাগের প্রস্তাবে খানিকটা ‘চাপে’ পড়েই সিপিএম নেতৃত্ব ‘রাজনৈতিক ও আইনগত’ ভাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ভি এস দলের অন্দরে তখনই জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট হলে তিনি কোনও ভাবেই পদে থাকতে চান না। সেই মর্মেই তাঁর অবস্থানের কথা লিখিত ভাবে পলিটব্যুরোকে জানিয়ে দিয়ে কারাট-বিজয়নদের শিবিরকে আরও ‘চাপে’ রাখলেন ভি এস।
রাজ্য সম্পাদক বিজয়নকে চিঠি না-দিয়ে সরাসরি পলিটব্যুরোকে লিখিত বক্তব্য জানানোর মধ্যে ভি এসের ‘সূক্ষ্ম চাল’ই দেখতে পাচ্ছে দলের একাংশ। তবে সিপিএমের শীর্ষ সূত্রের ইঙ্গিত, দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ মাথায় রেখেই ভি এসের চিঠির পরেও তাঁকেই বিরোধী দলনেতা হিসাবে দায়িত্ব পালনের ‘পরামর্শ’ দিতে পারেন কারাট।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কলকাতায় ভিএস। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
‘সাজানো অভিযোগ’ করা হচ্ছে বলে দাবি করলেও তাঁর নীতিগত অবস্থান যে পরিষ্কার, তা গোপন করছেন না ভি এস। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের ফাঁকেই বুধবার তিনি আনন্দবাজারকে বলেছেন, “আমার অবস্থান দল জানেই। আমার বক্তব্য এ বার লিখিত ভাবে পলিটব্যুরোকে জানিয়ে দিয়েছি। সাজানো অভিযোগ করা হতেই পারে। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই থেকে আমি পিছিয়ে আসব না!” প্রসঙ্গত, কাসারগোড় জেলায় ২.৩৩ একর খাস জমি তাঁর এক আত্মীয়কে পাইয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ভি এস বিধি ভেঙেছিলেন, এই অভিযোগে দুর্নীতি দমন শাখায় এফআইআর হয়েছে। কিন্তু ভি এস এবং তাঁর দলের বক্তব্য, টি কে সোমান নামে তাঁর ওই আত্মীয় জমির দখল পাননি। করুণাকরনের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের আমলে বরাদ্দ-করা জমিটির স্বত্ব ওই ব্যক্তি পেতে পারেন কি না, তা দেখতে আইন দফতরকে ‘নোট’ দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যক্তিগত ভাবে ফায়দা তোলার কোনও চেষ্টা তিনি করেননি। আইনের বাইরে গিয়ে কোনও ফায়দাও ওই ব্যক্তি পাননি।
একই সঙ্গে ভি এস এ দিন বলেছেন, “গণতান্ত্রিক অধিকার যে ভাবে ইউডিএফ সরকার দমন করতে চাইছে, ব্যক্তি অধিকারে যে ভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।” কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলাকালীনই কলকাতায় কেরলের নেতাদের কাছে খবর পৌঁছয়, মুলসিম লিগের (আইইউএমএল) সাংসদ আব্দুল ওয়াহাব এবং বিধায়ক আব্দুল সামাদের ই-মেল আইডি-তে প্রশাসনের তরফে আড়ি পাতার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল হচ্ছে সে রাজ্যে। মুসলিম লিগ আবার শাসক জোটে কংগ্রেসেরই শরিক! বেশ কিছু সংখ্যালঘু বিশিষ্ট জন ও সাংবাদিকদের ই-মেলেও নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতির ‘ফায়দা’ নিতে শাসক জোটের শরিক সম্পর্কিত এই প্রশ্নে আগেই প্রতিবাদ জানিয়ে রেখেছেন ভি এস। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষ হবে শুক্রবার। কিন্তু শেষ পর্বের জন্য অপেক্ষা না-করে সে দিন ভোরেই কলকাতা ছাড়ার কথা কেরলের বিরোধী দলনেতার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.