ব্যাঙ্কের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক স্কুল শিক্ষকের অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা! এমন ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের স্টেট ব্যাঙ্ক শাখায়। শহরের দীপালিনগর এলাকার বাসিন্দা ওই শিক্ষকের নাম পারিজাত সাহা। ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের সময়ে ওই বিপুল টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে রয়েছে দেখে বেশ ঘাবড়ে যান পারিজাতবাবু। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন। ব্যাঙ্কের তরফে ত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করে তা শুধরে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে স্বস্তির নিশ্বাস পেলেন পারিজাতবাবু। স্থানীয় চকরাম ব্রজলাল হাই স্কুলের শিক্ষক পারিজাতবাবু রেকারিং ডিপোজিট স্কিমে জমানো ১০ হাজার টাকা মেয়াদের দু’মাস আগে ১৫ জানুয়ারি তোলেন। রাতে নেট-ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে তুলে নেন। ওই টাকা তাঁর অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারও করেন। এর পরেই ঘটে যায় অবিশ্বাস্য ঘটনা। ওই শিক্ষক দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্টে মোট টাকার পরিমাণ দেখাচ্ছে ৪৯ হাজার ৫৭০ কোটি ৮ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৩৮ টাকা।
দেশের রেল বাজেটের (৫৮ হাজার কোটি টাকা) প্রায় সমপরিমাণ টাকার মালিক হয়ে যান তিনি। হতচকিত পারিজাতবাবু ঘাবড়ে গিয়ে তাঁর বন্ধু স্টেট ব্যাঙ্কের কামারপাড়া শাখার কর্মী অসিত শিকদারকে ফোনে ঘটনাটি জানান। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন ব্যাঙ্কের বালুরঘাট শাখা কর্তৃপক্ষ। এদিন স্টেট ব্যাঙ্কের বালুরঘাট শাখার মুখ্য ম্যানেজার শুভাশিস কর্মকার বলেন, “টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে এমনটা হয়েছে। রবিবার ছুটির দিন থাকায় সোমবার ওই শিক্ষক পারিজাতবাবু এসে বিষয়টি জানান। তখনই কলকাতা অফিসে জানানো হয়। সেখান থেকে মুম্বইয়ের সংশ্লিষ্ট আইটি বিভাগে জানানো হলে সব ঠিক হয়ে যায়। ওই টাকা আর পারিজাতবাবুর অ্যাকাউন্টে নেই।” শিক্ষক পারিজাতবাবুর সততার প্রশংসা করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তবে ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, পারিজাতবাবুর অ্যাকাউন্টে ওই টাকা দেখালেও তা তোলার কোনও উপায় ছিল না। মঙ্গলবারেও ঘটনার রেশ পুরো কাটাতে পারেননি ওই শিক্ষক। স্কুলে বসে তিনি বলেন, “এখনও মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন। তবে টাকা তোলার কথা ভাবতেই পারিনি।” তাঁর স্ত্রী দেবযানী দেবী বলেন, “প্রকৃত সৎ নাগরিকের দায়িত্ব পালন করেছেন উনি। আমাদের গোটা পরিবার এতে গর্বিত।”
|