হাসপাতালে স্বাস্থ্য কমিটি
চমকা পরিদর্শন নয়। মাসখানেক আগে সরকারিভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়ে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। হাসপাতালের অব্যবস্থা দেখে রোজকার পরিষেবা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন কমিটির বিধায়কেরা। এ দিন দুপুরে হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ১টা বেজে ৪৫ মিনিটে পৌঁছালেন বিধায়কদের দল। সরকারি নিয়মে দুপুর ২টো পর্যন্ত বর্হিবিভাগ খোলা থাকার কথা থাকলেও ততক্ষণে বর্হিবিভাগে ঢোকার লোহার গেটে বড় তালা ঝুলছে। হাসপাতালের সুপার কিংবা কোনও আধিকারিকই ঘটনাস্থলে ছিলেন না। কিছুক্ষণ বাদে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার যান। কেন ২টো’র আগেই বর্হিবিভাগ বন্ধ? এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের জবাব, “আমি তো জানি না, ২টো পর্যন্তই খোলা থাকার কথা।”
জলপাইগুড়ি হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। ছবি: সন্দীপ পাল
ডেকে পাঠানো হল হাসপাতাল সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদারকে। খোঁজ নিয়ে বিধায়করা জানলেন, প্রতিদিনই দুপুর দেড়টায় বর্হিবিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষুব্ধ বিধায়করা ভর্ৎসনা করলেন হাসপাতাল সুপার-সহ আধিকারিকদের। বর্হিবিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালের ভিতরে ডেকে নিয়ে যান স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। হাসপাতাল সুপারকে দিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এর পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিধায়কদের দল পৌঁছে দেখলেন, জরুরি ওষুধ সেখানে নেই। জরুরি বিভাগে রোগী এসে পৌঁছালে প্রাথমিকভাবে যে ওষুধ দেওয়া হয় সবই পাশের একটি ঘরে তালা বন্ধ রয়েছে বলে জানালেন এক কর্মী। ক্ষুদ্ধ বিধায়করা ওই ঘর খোলার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু চাবি উধাও! প্রায় আধঘন্টা পর চাবি খুঁজে জরুরি ওষুধের ঘর খুলতে দেখা গেল আবর্জনার স্তূপ, ঝাঁটা, ভাঙা আসবাবের ফাঁকে পড়ে রয়েছে জরুরি ওষুধের বাক্স। সেটিতেও ধুলোর পুরু আস্তরণ। তার পরে হাসপাতালের রান্নাঘরে ঢুকে বিধায়কেরা দেখলেন ঘরের মধ্যেই সাইকেল-সহ অন্যান্য অব্যহৃত সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। রোগীদের জন্য রান্না করা খাবার রাখার গামলার পাশেই জুতো পরে চলাফেরা করছেন কর্মীরা। অপরিসর রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়করা। বর্হিবিভাগ থেকে শুরু করে হাসপাতালের অর্ন্তবিভাগ সব জায়গাতেই ‘অব্যবস্থা’ দেখে বিধায়করা প্রকাশ্যেই তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কমিটির অন্যতম সদস্য তথা বর্ধমানের বিধায়ক সুনীল মণ্ডল সুপারকে ডেকে বলেন, “দক্ষিণবঙ্গ থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার হাসপাতাল ঘুরে এসেছি। জলপাইগুড়ি হাসপাতাল তো অব্যবস্থার রেকর্ড করেছে। বর্হিবিভাগ আধঘন্টা আগে বন্ধ হয়ে যায়, জরুরি বিভাগে জীবনদায়ি ওষুধ আবর্জনার মধ্যে তালা বন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়।” কমিটির সদস্য বিধায়ক শশী পাঁজাও বলেন, “আমরা তো আসছি, তা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। তার পরেও এমন হাল! কিছু বলার নেই।” এদিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিদর্শনের পরে সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি আসার পথে ফালাকাটা হাসপাতালও পরিদর্শন করে কমিটির সদস্যরা। সেখানেও বেশ কিছু অব্যবস্থার কথা বৈঠকে তুলে ধরেন সদস্যরা। সদর হাসপাতাল নিয়েও তাঁদের ক্ষোভের কথা বৈঠকে জানান কমিটির সদ্যসরা। কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “বর্হিবিভাগ বা বেশ কিছু জায়গায় কিছু অব্যবস্থা দেখা গিয়েছে। সেগুলি সবই জানিয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিষেবা উন্নতির করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। আমরা সবই দেখেছি, জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.