একশো দিনের প্রকল্পের কাজের জন্য চা বাগানে শ্রমিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় উৎপাদন মার খাচ্ছে বলে দাবি করল টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) উত্তরবঙ্গ শাখা। সরকারি ওই প্রকল্পের জন্য মালিকরা যে বেজায় সমস্যার মুখে পড়েছেন তা এ বছর অনুষ্ঠিত পর পর দুটি মালিক সংগঠনের বক্তব্যে উঠে এসেছে। নাগরাকাটায় অনুষ্ঠিত সংগঠনের ৪১ তম বার্ষিক সভায় টাইয়ের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান আর কে রুংটা বলেন, “১০০ দিনের প্রকল্পের কারণে শ্রমিকরা বাগানের কাজে আসছেন না। অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে ঠিক মতো কাজ হচ্ছে না। চায়ের উৎপাদনের পাশাপাশি গুণগত মান বজায় রাখতে অন্তত ভরা মরসুমে বাগানের শ্রমিকদের দিয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করা হোক।” বিষয়টি যে রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত নয় তা জানিয়ে দেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ। তিনি জানান, যে কেউ ১০০ দিনের কাজ চাইলে তা দিতে হবে। প্রকল্পটি কেন্দ্রের। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কিছু করার না। থাকলেও সরকারের কাছে বাগানের সমস্যার কথা জানানো হবে বলে ডিসি জানিয়েছেন। চা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চায়ের বাজার আগের তুলনায় অনেক চাঙা হয়েছে। দামও ভাল মিলছে। গত দুই-তিন বছর ধরে বিশ্ব বাজারে যেভাবে ভারতীয় সিটিসি চায়ের কদর বাড়ছে তাতে অধিক উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছেন মালিকরা। তবে, প্রতিবন্ধকতা হিসাবে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের প্রকল্প। টাইয়ের পক্ষে জানানো হয়েছে, ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের জন্য বাগানের ৩০-৩৫ শতাংশ শ্রমিক বাগানের কাজ ফেলে বাইরে সরকারি ওই প্রকল্পের কাজে চলে যান। এর ফলে বাগানগুলিতে শ্রমিকের অভাব তৈরি হয়েছে। মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখলে কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু মতো কাজ চালিয়ে যেতে পারে। গত বছর পর্যন্ত শ্রমিকরা দৈনিক ৬৭ টাকা মজুরি হাতে পেলেও বর্তমানে তাঁরা ৮৫ টাকা বাগান থেকে পাচ্ছেন। বর্তমান এই বেতনের তুলনায় সরকারি ওই প্রকল্পে এক দিনে ১৩০ টাকা মজুরি পান শ্রমিকরা। বেশি টাকার জন্য বাগানের কাজ ফেলে তারা প্রকল্পের কাজে ছুটছেন। অপর দিকে রাজ্য সরকার সামাজিক খরচ ৫০ শতাংশ বহন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও কাজ শুরু হয়নি। পাশাপাশি হাতির হানায় চা বাগানগুলিতে ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ বাগান মালিকদের। হাতির হানা রোধ করার দাবিও তোলা হয় টাইয়ের সভায়। এ ছাড়া চা শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও নানান সমস্যার কথা তুলে ধরেন টাইয়ের সভাপতি হেমন্ত বাঙ্গুর। |