শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতিতা গৃহবধূ কবিতা দেবনাথের পাশে দাঁড়াল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। কবিতা দেবী আবেদন জানালে জেলা প্রশাসন তাঁকে সরকারি হোমে রেখে হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেবে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “সবিতা দেবী সাবালিকা। তাঁর মতামত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতে না-চাইলে জেলা প্রশাসন তাঁকে সরকারি হোমে রেখে হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেবে। তিনি কী চান সেটা জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে।” ওই গৃহবধূকে সাহায্য করতে চায় আলিপুরদুয়ার পুরসভাও। ওই পুরসভার চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কবিতা দেবী জানালে আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।” মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে বসে কবিতা দেবী সাফ জানান, তিনি আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চান না। বাপের বাড়িতেও ফিরতে চান না। প্রশাসন সাহায্য করলে তিনি ছেলেকে নিয়ে হোমে থেকে হাতের কাজ শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে তিনি পুণ্ডিবাড়িতে বাপের বাড়িতেই ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। কবিতা দেবী বলেন, “যেভাবে দিনের পর দিন আমার উপরে অত্যাচার হয়েছে তাতে আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চাই না। বাপের বাড়িতেও যেতে চাই না। সরকারি হোমে থেকে হাতে কাজ শিখে ছেলেটাকে মানুষ করতে চাই।” বাড়ির গাছ থেকে সুপারি পাড়ার মতো বিবাদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কবিতা দেবীর উপরে নির্যাতন চালান। মারধর ছাড়াও অর্ধনগ্ন করে শরীরে বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ওই মহিলাকে রক্ষা করতে শামুকতলার ছোট চৌকিরবস গ্রামের বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে শামুকতলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মহিলাকে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হলে কবিতা দেবীকে পুলিশ বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে জেলাশাসক আলিপুদুয়ারের মহকুমাশাসককে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে কবিতা দেবীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। খবর পেয়ে নির্যাতিতা ওই মহিলার পাশে দাঁড়ায় আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চ। কবিতা দেবীর খাওয়া দাওয়ার খরচ বহন করছেন অভিভাবক সমিতির সদস্যরা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীকে মঞ্চের তরফে ফ্যাক্সবার্তা পাঠানো হবে বলে জানান সম্পাদক ল্যারি বসু। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী তাঁকে কম্বল দেন। অসম বঙ্গ যোগী নাথ সম্মিলনীর পক্ষ থেকে এ দিন ওই মহিলার হাতে শীতবস্ত্র ও খাবার তুলে দেওয়া হয়। |