ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র তোলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার শিলিগুড়ি কলেজে দফায়-দফায় হাতাহাতি হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) ও এসএফআই নেতা-সমর্থকদের। দুই সংগঠনের ৬ ছাত্রী সহ অন্তত ১৫ জন জখম হন।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের কারও চোট গুরুতর নয়। তবে এসএফআইয়ের অভিযোগ, তাদের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস-সহ ১০ জন কর্মী-সমর্থককে পুলিশের সামনেই বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছাত্রীরাও ছিলেন। ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় আধ ঘণ্টা হিলকার্ট রোডের হাসমি চক অবরোধ করেন এসএফআই সমর্থকেরা। পরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর দাবি, “পরিকল্পিত ভাবে শিলিগুড়ি কলেজে এসএফআই সমর্থকদের উপরে আক্রমণ হয়েছে। স্থানীয় মন্ত্রীর নির্দেশে ওই ঘটনা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন হবে।” |
অশোকবাবুর অভিযোগ ‘ঠিক নয়’ বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “আমি যত দূর শুনেছি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। শিক্ষা ক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখতে আমরা সচেষ্ট। সে জন্য
আগেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছি। বর্তমানেও আমার ভূমিকা মানুষ দেখছেন।” টিএমসিপি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্ণয় রায়ের দাবি, এসএফআইয়ের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে কলেজের বাইরে মারপিট হয়। সেই সময় টিএমসিপি সমর্থকদের আক্রমণের চেষ্টা হয়। তিনি বলেন, “এসএফআই মিথ্যে অভিযোগ করেছে। আমাদের সমর্থকদের উপরে হামলা শুরু হলে আমরা সরে যাই। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “কলেজে মনোনয়ন পত্র তোলা নিয়ে উত্তেজনার আশঙ্কা ছিল। সে জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। উভয়পক্ষের গোলমালের সময়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে সকলকে মনোনয়ন পত্র তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। কোনও পক্ষই আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি। মনোনয়ন পত্র তোলা ও পেশের প্রক্রিয়া যাতে নির্বিঘ্নে হয় সে জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
কলেজ সূত্রের খবর, এ দিন শেষ পর্যন্ত ছাত্র সংসদের ৪৫টি আসনের সব কটির জন্যই মনোনয়ন পত্র তুলতে পেরেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কিন্তু এসএফআই ৩০টি আসনে তুলতে পেরেছে। আজ, বুধবার বাকি আসনগুলির জন্য মনোনয়ন পত্র তোলা হবে বলে এসএফআই জানিয়েছে। সে জন্য এ দিন সন্ধ্যায় সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়ে এসএফআই সদস্যদের নিরাপত্তার দাবি করেছেন।
ছাত্র সংসদের নির্বাচনে অশান্তি এড়াতে অধ্যক্ষের ডাকা বৈঠক ঘিরে একাধিক ছাত্র সংগঠনের হাতাহাতিতে উত্তপ্ত হল কোচবিহারের শীতলখুচি কলেজও। এ দিন বিকেলে ওই ঘটনায় অন্তত ৫ জন জখম হন। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে খোদ অধ্যক্ষ-সহ কয়েকজন শিক্ষকও ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে যান বলে অভিযোগ। শীতলখুচি থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। |