ভাসমান জেটি উল্টে নদীতে তলিয়ে গেল আস্ত একটি পল্টন সেতু। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জের দুলদুলিতে। দীর্ঘ মেরামতির অভাবে বেশ কিছুদিন ধরে লেবুখালি ও দুলদুলির মধ্যে সাহেবখালি নদীর এর পারের ভাসমান জেটি ফুটে জল ঢুকছিল। এ দিন হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে ওই ভাসমান জেটিটি উল্টে যায়। জেটি ও নদীর পাড়ের সঙ্গে যুক্ত পল্টন সেতুটি ভেঙে পড়ে। তবে ঘটনার সময় সেতুর উপর কেউ না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। এ বিষয়ে দুপুরে বসিহাটের মহকুমাশাসক অনামিকা মজুমদার বলেন, “ঘটনাটি এখনও আমাকে কেউ জানায়নি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় এখানে সেতু হবে, নাকি বার্জ চলবে এই বিতর্কের মধ্যেই মাপজোক ও মাটি পরীক্ষার শেষে সেতু তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। হিঙ্গলগঞ্জের দুলদুলি পঞ্চায়েত এলাকায় সাহেবখালি নদীর উপরে সেতুর জন্য বাম জমানায় দু’দুবার শিলান্যাস করা হয়। কিন্তু সেতু আর হয়নি। |
কয়েক কোটি টাকা খরচ করে শেষ পর্যন্ত ভাসমান জেটির উদ্বোধন করে বার্জ চলাচল শুরু হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তাও বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একেবারে জীর্ণ হয়ে পড়েছিল ভাসমান জেটিটি। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে জেটিটির একদিক জলে তলিয়ে যেতে বসেছিল। শেষ পর্যন্ত এ দিন জেটিটি উল্টে যায় এবং জেটির সঙ্গে যুক্ত থাকা পল্টন সেতুটিও ভেঙে যায়। মহকুমা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, পল্টন সেতু ও ভাসমান জেটি তৈরি করে বার্জ চালিয়ে লাভ না হওয়ায় সাময়িক ভাবে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার প্রায় ৬ বছর কেটে গিয়েছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, মহকুমা শাসক তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন জেটিটি মেরামত করে ফের বার্জ চালানো যায় কিনা তা দেখা হবে। কিন্তু তা আর হয়নি। তাই এ দিন ভাসমান জেটিটি উল্টে গেলে ও পল্টন সেতুটি বেঙে যাওয়ায় তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সবাপতি আবু বক্কর গাজি বলেন, “ভাসমান জেটিটি ফুটো হয়ে জল ঢোকার কথা সর্বত্র জানানো হলেও প্রসাসন মেরামতির কোনও ব্যবস্থা না করায় পল্টন সেতুটি ভেঙে পড়ল। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন একজন বিএসএফ জওয়ান। ” এদিন সকালে দুলদুলি ফেরিঘাটের কাছেই ছিলেন পবিত্র জোদ্দার, কল্পনা মণ্ডল। তাঁদের কথায়, “হঠাৎ প্রচণ্ড একটা শব্দ শুনে তাকাতেই দেখি পল্টন সেতুর একটা অংশ নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে।” |