স্কুলের ইউনিফর্ম তৈরির জন্য সর্বশিক্ষার দেওয়া টাকা ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়ে, বাধ্যতামূলকভাবে ‘বিশেষ’ ঠিকাদারকে দিয়ে পোশাক বানানোর অভিযোগ উঠল স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এবং ওই ঠিকাদারদের দুপুর পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। ঠিকাদার দু’জনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। মঙ্গলবার এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পুলিশকে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
স্কুল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশিক্ষা দফতর থেকে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের পোশাক তৈরির জন্য ৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। তেঁতুলিয়ার ওই স্কুলটিও পোশাকের জন্য টাকা পায়। ইতিমধ্যে স্কুলটিতে ৩৫০ জন ছাত্রীকে তাদের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ পোশাক তৈরির জন্য এক যুবককে ঠিক করে। পোশাক তৈরির জন্য বাধ্যতামূলকভাবে তার হাতে ৩০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে ছাত্রীদের। এ দিন দুপুরে ওই দোরজি একজনকে নিয়ে স্কুলে আসেন। ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পোশাকের মাপ নিতে গেলে গণ্ডগোলের শুরু। ছাত্রীদের কেন বাধ্য করা হল ওই দোরজির কাছ থেকে পোশাক বানানোর জন্য তা জানতে চেয়ে অভিভাবকদের একাংশ স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভে সোচ্চার হন। তাঁরা প্রধান শিক্ষিকা এবং দোরজি গোপীনাথ দাস ও তাঁর সঙ্গীকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি রীতিমত অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। অভিযোগ, ওই সময়ে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ ঠিকাদারদের মারধর করে একটি ঘরে তালাবন্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ স্কুলে যায়। অভিভাবকদের অভিযোগমত দোরজিকে দেওয়া টাকার অঙ্ক লেখা খাতা, ক্যাশমেমো ও টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে ২৭১ জন ছাত্রী পোশাক তৈরির জন্য টাকা দিয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মুজিবর রহমান, শচীনন্দ বিশ্বাস বলেন, “সর্বশিক্ষার টাকায় যে যেখান থেকে পারবে পোশাক তৈরি করে নেবে। অথচ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার নির্দেশে একজন ঠিকাদারকে দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে তাঁর কাছ থেকে পোশাক তৈরি করা হচ্ছিল। মেয়েদের জন্য মহিলা দোরজিও আনা হয়নি। ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে পোশাক না করলে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবেনা বলে শাসানোও হয়। অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করে প্রধান শিক্ষিকা শিবানি নস্কর বলেন, “একটি ছেলে এসে বলল সে বেকার। তাই তাকে ছাত্রীদের স্কুলের পোশাক তৈরির জন্য বলা হয়। কোনও ছাত্রীকে বাধ্য করা হয়নি ওই দোরজির কাছে পোশাক তৈরির জন্য।” স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক রমেন সর্দার বলেন, “দু’চার জন অভিযোগ জানিয়েছিল। তবে স্কুলের ঠিক করা দোরজির কাছ থেকে পোশাক তৈরির জন্য কোনও ছাত্রীকে জোর করা হয়নি।” |