লাল-সাদা-নীল রঙের জুতো। গত বছর তাঁর তিনটে গ্র্যান্ড স্লাম জয় বোঝাতে। জুতোর পিছন দিকে তাঁর দেশ সার্বিয়ার পতাকার চিহ্ন। অস্ট্রেলীয় ওপেনের প্রথম ম্যাচে বিশ্বের এক নম্বর তারকা নোভাক জকোভিচের টানা ১৭টা গেম জেতা, না কি তাঁর এ দিনের অভিনব টেনিস শু কোনটা বেশি নজরকাড়া তা নিয়ে টেনিস বিশেষজ্ঞরাও দ্বিধাগ্রস্ত! এমনকী ঘরের মেয়ে সামান্থা স্তোসুর যে আর এক বার সমর্থকদের তুমুল প্রত্যাশার চাপে ভেঙে পড়ে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গেলেন, সেই মহাঅঘটনও যেন পিছনে পড়ে গেছে মঙ্গলবার মেলবোর্ন পার্কে!
মাস চারেক আগে মাত্র যতই সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে স্তোসুর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন হোন না কেন, নিজের দেশে তাঁকে নিয়ে তৈরি প্রবল প্রত্যাশার চাপ থেকে যেন কিছুতেই বেরোতে পারছেন না কুইন্সল্যান্ডের মেয়ে। মেলবোর্নের প্রচণ্ড রোদের তেজ থেকে বাঁচতে প্রথম ম্যাচে কালো চশমা পরে খেলতে নেমে র্যাঙ্কিংয়ে নিজের চেয়ে পঞ্চাশেরও বেশি নীচে থাকা রোমানিয়ান প্রতিপক্ষ সোরানা কিরস্তিয়ার সামনেও কেমন যেন নিস্তেজ হয়েই থাকলেন ষষ্ঠ বাছাই স্তোসুর। খেতাবের এ বার অন্যতম দাবিদার হারলেন স্ট্রেট সেটে। ৬-৭ (২-৭), ৩-৬। অটুট রাখলেন নিজের দেশে তাঁর জঘন্য পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা। স্তোসুর দশ বার অস্ট্রেলীয় ওপেনে নেমে কখনও চতুর্থ রাউন্ড টপকাননি। এ বছরই ব্রিসবেন আর সিডনি, দুটো প্রস্তুতি টুর্নামেন্টে হেরেছেন যথাক্রমে দ্বিতীয় আর প্রথম রাউন্ডে। |
জকোভিচ ছিলেন আবার ঠিক উল্টো মেজাজে। ইতালির পাওলো লোরেঞ্জিকে ৬-২, ৬-০, ৬-০ গুঁড়িয়ে দিয়ে উঠে অবশ্য সম্পূর্ণ অন্য প্রসঙ্গে চলে যান সাংবাদিক সম্মেলনে। রাফা-রজার বিতর্ক প্রসঙ্গ টেনে এক রকম আবেদনই জানান, “এটিপি যে পেশাদার ট্যুরে খেলাটার মানোন্নয়ন নিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে, সে ব্যাপারে কথাবার্তাগুলো যেন লকাররুমের ভেতরেই থাকে। ক্লোজড্ ডোর আলোচনা যেন প্রকাশ্যে চলে না আসে।” ঘুরিয়ে নাদাল ও ফেডেরারকে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য দূর করার আবেদন জানিয়ে কোর্টে দুই কিংবদন্তির প্রবলতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরও বলছেন, “পুরুষদের ট্যুরের নতুন চিফ ব্র্যাড ড্রিউইটের কাছে অস্ট্রেলীয় ওপেন শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে গিয়ে টেনিস প্লেয়ারদের সংস্থা অবশ্যই ডেভিস কাপের সূচি আর গ্র্যান্ড স্লামের পুরস্কার অর্থ নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছিল। কিন্তু সেই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা জনসমক্ষে ফাঁস হয়ে যাওয়াটা মোটেই কাম্য নয়। এতে রাজনাীতি বাড়ে আর পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কহানিই ঘটে। খেলাটার উন্নতি হয় না।”
এ সবের মধ্যেই এ দিন তারকাদের মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছেন শারাপোভা, কিভিতোভা, সেরেনা উইলিয়ামস, হিউইট, রডিক ও অ্যান্ডি মারে। গত দু’বছরের রানার্স মারেকে অবশ্য প্রথম সেট ছিনিয়ে নিয়ে, একটা সময় ৪১টা শটে শেষ হওয়া দীর্ঘ র্যালিতে ব্যতিব্যস্ত করে শেষমেশ হার মানেন উঠতি মার্কিন টেনিস প্রতিভা, ১৯ বছরের রায়ান হ্যারিসন। মারে জেতেন ৪-৬, ৬-৩, ৬-৪, ৬-২। |