ভিভিএস লক্ষ্মণের অবসরের দাবি নিয়ে যখন সরব ভারতীয় ক্রিকেটমহল, তখন সতীর্থের পাশে দাঁড়ালেন গৌতম গম্ভীর। ভারতীয় ওপেনার সাফ বলে দিয়েছেন, এক জন ক্রিকেটারের অবসর নিয়ে একমাত্র সে নিজেই কথা বলতে পারে। লক্ষ্মণের হয়ে সিদ্ধান্তটা অন্য কেউ নিতে পারে না। সবাই মিলে শুধু এক জনের সমালোচনা করাও ঠিক নয়। জাতীয় দলের অন্য ক্রিকেটাররাও জানিয়েছেন, এখনই অবসরের কথা ভাবছেন না লক্ষ্মণ।
“লক্ষ্মণ ক্রিকেটের অন্যতম কিংবদন্তি। শুধু লক্ষ্মণ নয়, আমরা কেউই তো ভাল খেলতে পারিনি। প্রথম ছ’সাত জন ব্যাটসম্যানের সমান সমালোচনা হওয়া উচিত। দলগত ভাবে আমরা ব্যর্থ। তা হলে শুধু লক্ষ্মণের সমালোচনা হবে কেন?” প্রশ্ন গম্ভীরের। হায়দরাবাদি ব্যাটসম্যানের সমর্থনে বলছেন, “ভারতীয় ক্রিকেটকে এত বছর ধরে এত কিছু দিয়েছে লক্ষ্মণ। এখনও ও প্রচুর খাটছে। একটা ভাল ইনিংস পেলেই লক্ষ্মণ আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে। ওর অবসর নিয়ে সিদ্ধান্তটা মিডিয়া, ভারতীয় সমর্থক বা প্রাক্তন ক্রিকেটাররা কেউ নিতে পারেন না। ওটা লক্ষ্মণের নিজেরই নেওয়া উচিত। গোটা টিম লক্ষ্মণের পাশে আছে।” |
এ দিন ওয়াকায় নেট সেশনে দীর্ঘক্ষণ ব্যাট হাতে দেখা গেল লক্ষ্মণকে। অনুশীলনের প্রায় পুরো সময়টাই লক্ষ্মণের সঙ্গে কাটান কোচ ডানকান ফ্লেচার। ফিল্ডিং কোচ ট্রেভর পেনি তাঁকে বল ছুড়ে ছুড়ে অনুশীলন করান। সব মিলিয়ে যা ইঙ্গিত, তাতে অ্যাডিলেডে লক্ষ্মণের বাদ পড়ার সম্ভাবনা কম। ওই মাঠেই রয়েছে তাঁর ১৪৮ রানের স্মরণীয় ইনিংস। ২০০৩-এর ওই টেস্টে ৫৫৬ করেও হারতে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়ে একটা গোটা দিন ব্যাট করে পঞ্চম উইকেটে ৩০৩ রান তুলে দিয়েছিলেন লক্ষ্মণ।
সংকল্প এবং আত্মবিশ্বাস যদি লক্ষ্মণের শরীরী ভাষা হয়, একেবারে অন্য ছবি দেখা গেল বীরেন্দ্র সহবাগের মধ্যে। ধারাবাহিক ব্যাটিং ব্যর্থতার পাশাপাশি অ্যাডিলেডে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার চাপ তাঁর উপর থাকলেও সহবাগকে দেখে সে সব কিছুই বোঝা যায়নি। দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ-গম্ভীররা যেখানে অনেকক্ষণ নেটে কাটালেন, সেখানে সহবাগ টানা ব্যাটিংয়ের ধারে-কাছেও গেলেন না। তাঁর নেট করা বলতে প্যাড ছাড়াই খেপে খেপে থ্রো-ডাউন আর স্লো বোলিংয়ের বিরুদ্ধে হাল্কা ব্যাটিং। দীর্ঘ সফরে এক মাস পরে কোনও ম্যাচ খেলতে নামবেন উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। যাঁকে নিয়ে গম্ভীরের বক্তব্য, “ও ভাল উইকেটকিপার। আশা করছি ভাল রানও করতে পারবে।”
ইংল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও টেস্ট সিরিজ হোয়াইটওয়াশের মুখে দাঁড়িয়ে ভারত। স্বভাবতই গম্ভীরের গলায় আত্মসমালোচনা, “দেশের মর্যাদা রক্ষা করতে পারিনি আমরা। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। বুঝতে পারছি দেশে এটা নিয়ে প্রচণ্ড সমালোচনা চলছে। সেটা মেনে নিতে আমরা তৈরি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।” সচিনের শততম সেঞ্চুরির চেয়ে সিরিজে ভাল পারফরম্যান্সই যে দলের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, জানিয়েছেন গম্ভীর। ধোনির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সাফাই, “অধিনায়ক নয়, মাঠে যে এগারো জন ক্রিকেটার খেলে তারাই তফাত গড়ে দেয়। গোটা দল পারফর্ম করতে না পারলে তার দোষ একা ধোনি নেবে কেন?”
ভারতীয় দল যখন হোয়াইটওয়াশ আটকাতে মরিয়া, তখন বিপক্ষ শিবিরের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে তাদের জুতো! অস্ট্রেলিয়ার এক ঝাঁক তরুণ পেসারের চোটের জন্য তাঁদের বুট দায়ী হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। প্যাট কামিন্স, জেমস প্যাটিনসনদুই পেসারই পায়ের চোটে ভুগছেন। এঁরা দু’জনেই এক ধরনের বুট ব্যবহার করেন। অস্ট্রেলিয়ার টিম পারফরম্যান্স ম্যানেজার প্যাট হাওয়ার্ড জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন। এ দিকে, ২৪ জানুয়ারি শুরু অ্যাডিলেড টেস্টে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে পিটার সিডলকে। তাঁর জায়গায় প্রথম দলে আসতে পারেন অফস্পিনার নাথন লিয়। |