তিন ঘরছুট গন্ডারের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ না-পামুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। গত মাসে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ঘেরাটোপ ছেড়ে বের হয়ে এসেছিল ১০টি গন্ডারের একটি দল। তার মধ্যে তিনটি গন্ডার চলে এসেছে যোরহাটে। একটি পুরুষ, একটি স্ত্রী, সঙ্গে একটি শাবক। শিকারিদের হাত থেকে গন্ডারদের প্রাণ বাঁচাতে ও তাদের ঘরে ফেরাতে পিছু নিয়েছেন বনরক্ষীদের একটি দল। কিন্তু এক মাসে ১০০ কিলোমিটার পথ পার হয়েও ঘরমুখী হচ্ছে না গন্ডার-পরিবার। আজ সকাল থেকে যোরহাটের না-পামুয়া গ্রামে গন্ডারের হানায় তিন গ্রামবাসী জখম হন।
সকালে নিজের ঘর থেকে বেরিয়েই গন্ডারের মুখোমুখি হন ভোলারাম দাস। কাজিরাঙায় গন্ডার দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু ঘরের দাওয়ায় গন্ডার তাঁকে দেখতে আসবে ভাবতেও পারেননি। তেমনই অবস্থা প্রবীণ দাস এবং বাবুল দাসের। আজ সকালে দুবনিপথারে গরু চরাচ্ছিলেন। কালো বিরাট দুই গন্ডারও তখন বাচ্চা নিয়ে সেখানে ভ্রাম্যমাণ। মোষ মনে করে কাছাকাছি যেতেই গন্ডাররা তেড়ে আসে। দু’জনই জখম হয়ে যোরহাট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। সঙ্গে বাচ্চা থাকায় আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে গন্ডার দম্পতি।
বন দফতর সূত্রে খবর, এখন পরিবারটি শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কাজিরাঙা ছেড়ে বের হয়ে আসা ১০টি গন্ডারের মধ্যে তিনটিকে ইতিমধ্যেই চোরাশিকারিরা মেরে ফেলেছে। বাকি সাতটিকে বাঁচাতে পাঁচ জন রক্ষীর তিনটি দল রাইফেল ও দোনলা বন্দুক নিয়ে ব্রহ্মপুত্রের পাড় ও নানা এলাকায় গন্ডারের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। মাজুলির বিট অফিসার অতুল দাস দেড় মাস ধরে পাঁচ জনের দল নিয়ে গন্ডার ধাওয়া করছেন।
গন্ডারের পাশাপাশি হাতির পালও যোরহাট বন দফতরকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে। যোরহাট, গোলাঘাট সীমান্তে ঘাঁটি গেড়েছে প্রায় পঞ্চাশটি হাতি। গত এক মাসে তারা অন্তত ৭০টি বাড়ি ভেঙেছে। হাতির পালকে তাড়াতে দিবারাত্র ব্যস্ত রয়েছেন সাত বনরক্ষী। বনকর্তাদের বক্তব্য, জঙ্গলে ফেরানোর থেকেও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোরাশিকারিদের হাত থেকে ওই গন্ডার পরিবারকে বাঁচানো। এই বিষয়ে গ্রামবাসীদের সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। |