বলছে সমীক্ষা
রাস্তার ধারের গাছ নষ্টের মূল কারণ প্লাস্টিক ও জঞ্জালই
ই শহরে রাস্তার ধারে লাগানো যত গাছ নষ্ট হয়, তার প্রায় অর্ধেকেরই কারণ প্লাস্টিক এবং জঞ্জাল। এমনই তথ্য উঠে এসেছে বন দফতরের একটি সমীক্ষা থেকে। বন দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে রাস্তার ধারে বসানো একটি গাছের ঝোপও বাঁচানো যায়নি। কারণ, সেগুলির অধিকাংশই চাপা পড়ে গিয়েছে বর্জ্য আর প্লাস্টিকে।
বন দফতর জানায়, শহরের দূষণ ও মানুষের অত্যাচারে গাছ বাঁচানো সহজ নয়। তার উপরে ফুটপাথ কেটে রাস্তা চওড়া করা ও ফ্লাইওভার তৈরির জন্য প্রচুর গাছ কাটতে হয়। বনপাল (নগর ও বিনোদন) সৌরভ চৌধুরী জানান, শহরে চারাগাছের পাতায় যে পরিমাণ ধুলো ও গাড়ির ধোঁয়ার কার্বন জমে, তাতে গাছ বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মাথায় রেখেই তাই আমরা ২০০৬ থেকে কলকাতায় বৃক্ষরোপণ ও বনসৃজন করছি। এ পর্যন্ত বন দফতরের পক্ষ থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি গাছ লাগানো হয়েছে।” সৌরভবাবু জানান, ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রতি বছর ৪ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। এই বছর সংখ্যাটা ২৫ হাজারে পৌঁছেছে। তার মধ্যে অবশ্য ৯ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে নিউ টাউনেই।
কিন্তু সেই গাছেরও অনেক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মানুষের অসচেতনতায়। তাই কত গাছ বেঁচে আছে, তা জানার জন্য সম্প্রতি একটি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করায় বন দফতর। সেই সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরে কলকাতায় রাস্তার ধারে যত গাছ লাগানো হয়েছে, তার ৭৫ শতাংশ বেঁচে রয়েছে। আর রাস্তার ধারের যত গাছ নষ্ট হয়েছে, তার বেশির ভাগই হয়েছে মানুষের হাতে।
তার মধ্যে ৪০ শতাংশ গাছ মরে গিয়েছে শুধু প্লাস্টিক ফেলার কারণেই। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করতে গিয়ে নষ্ট হয়েছে ৩৩ শতাংশ গাছ। ২৫ শতাংশ গাছ নষ্ট হচ্ছে ফুটপাথবাসীদের উপদ্রব ও পথচলতি মানুষের চারাগাছের পাতা ছেঁড়া ও ডগা ভেঙে দেওয়ার অভ্যাসের কারণে বলে জানিয়েছে বন দফতর।
বৃক্ষরোপণ ছাড়াও শহরের কিছু জায়গায় বনসৃজন হয়। সৌরভবাবু জানান, মনোহরদাস তড়াগের দক্ষিণ পাড়ে, রুবি হাসপাতালের পিছনে, বিদ্যাসাগর সেতুর নীচে বা দমদমে যে বনসৃজন হয়েছে, তা এত দিনে জঙ্গলের চেহারা নিয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট চেহারা মনোহরদাস তড়াগ আর মেয়ো রোডের পাশের জঙ্গলের। বন দফতর ওই জঙ্গলের নাম দিয়েছে ‘শাল-পিয়াল-মহুল’। কেবল চেহারাতেই নয়, ৮ হাজারের বেশি গাছের জঙ্গল চরিত্রেও রীতিমতো পূর্ণাঙ্গ অরণ্য হয়ে উঠেছে। সৌরভবাবু বলেন, “ওই জঙ্গলে ৩৪ প্রজাতির গাছ রয়েছে। শাল, পিয়াল, সেগুন, মহুয়া, বয়রা, নিম, জাম বা ডুমুরের মতো গাছের চারা আনা হয়েছে জঙ্গলমহল থেকে। ১৬ জাতের পাখি নিয়মিত চোখে পড়ে। অন্তত ৯ জাতের পাখি ওই জঙ্গলে বাসা বাঁধে। আর আছে ২৭ জাতের প্রজাপতি। ওই জঙ্গলে কাঠবেড়ালি, বেজি আর সাপেরও দেখা মেলে।” ওই জঙ্গলে কয়েকটি নিচু জায়গায় জল জমে থাকে। সেটাই জঙ্গলের প্রাণী ও পাখিদের স্থায়ী আবাস গড়ে তোলার জন্য আদর্শ হয়ে উঠেছে।
বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরে বৃক্ষরোপণের প্রবণতা বেড়েছে। বন দফতর স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করছে। এতে ওই শিশু-কিশোরেরাই রোপিত চারার যত্ন নিতে শিখছে। তবে বড়রাও জঞ্জাল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতন ও গাছের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হলে তাদের কাজ করতে সুবিধে হবে। আরও অনেক গাছ বাঁচানো যাবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.