|
|
|
|
আগরতলা বিমানবন্দর |
জমি জটেই আটকে রয়েছে আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা |
আশিস বসু • আগরতলা |
জমি রয়েছে। কিন্তু সেই জমি কেনার মতো অর্থের জোগান নেই রাজ্য সরকারের কাছে। অতিরিক্ত সেই জমির অভাবে আটকে গিয়েছে আগরতলা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের কাজ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ২০০৯ সাল থেকে অতিরিক্ত জমির জন্য আবেদন জানিয়ে আসছে ত্রিপুরা সরকারের কাছে।
দেশ জুড়ে ছোট ছোট বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের কাজ হাতে নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া)। এএআই চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল সম্প্রতি কলকাতায় এসে জানিয়ে গিয়েছেন, দেশ জুড়ে প্রায় ২০০ টি ছোট ছোট বিমানবন্দরকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে। ফলে জমির প্রয়োজন সর্বত্র। আগরতলা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুধাময় মাইতি জানিয়েছেন, সমীক্ষা করার পরে রাজ্য সরকারের কাছে বিমানবন্দর লাগোয়া অতিরিক্ত ৭২ একর জমি চাওয়া হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
এএআই-এর রিজিওনাল এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর আর কে সিংলা বলেন, “বিমানবন্দর আধুনিক করে গড়ে তুলতে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর কিছু নির্দেশিকাও পালন করতে হবে। বিমানবন্দরের আকার ছোট হলে এক রকমের নির্দেশিকা থাকে। বিমানবন্দর যেই বড় হয়ে যাবে অমনি নির্দেশিকাও বদলে যাবে।” বর্তমানে যে ৫০০ একর জায়গা জুড়ে আগরতলা বিমানবন্দর রয়েছে, তার মধ্যে ৪০০ একর জমিই ব্যবহার করা হয় বিমান ওঠানামার কাজে। কিন্তু বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ করতে হলে প্রয়োজন অতিরিক্ত জমির।
ডিজিসিএ-এর নিয়ম অনুযায়ী আগরতলা বিমানবন্দরের যে রানওয়ে থেকে এখন বিমান ওঠানামা করে তার দু’পাশে ১৫০ মিটারের মতো উন্মুক্ত জায়গা প্রয়োজন। তা না থাকলে বোয়িং ৭৩৭, এয়ারবাস ৩২১, এয়ারবাস ৩১৯-এর মতো বিমান ওঠানামা করতে পারে না। অথচ আগরতলায় রানওয়ের দু’পাশে এখন রয়েছে ৮০-৯০ মিটার খোলা জায়গা। তা সত্ত্বেও বড় বিমান
ওঠানামা করছে।
২০১০ সালের ২২ মে ম্যাঙ্গালোরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান রানওয়ে ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল। ওই ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ১৫৮ জন। এর পরেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়ে আরও কঠোর মনোভাব নিয়েছে ডিজিসিএ। সিংলার কথায়, “এত দিন প্রতি বছরই এই নিয়ম শিথিল করার আবেদন জানিয়ে এসেছি। এবং ডিজিসিএ-ও প্রতিবারই তা মেনে নিয়েছে। কিন্তু এ বার না মানলে তো শুধু আগরতলা নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের বহু বিমানবন্দরেই বড় বোয়িং ও এয়ারবাস ওঠানামা বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু ছোট এটিআর বিমান চালাতে হবে। সেটা কার্যত সম্ভব নয়।”
প্রশ্ন উঠেছে, কুয়াশার সময়ে আগরতলা বিমানবন্দরে উড়ান চলাচলের বিঘ্ন নিয়েও। প্রায় প্রতি দিনই বিমান উড়তে বা নামতে বিলম্ব হচ্ছে। শীতের সকালেও বাতিল হচ্ছে উড়ান। সুধাময়বাবু জানিয়েছেন, বিমানবন্দর আধুনিকীরণের কাজ হলে ঘন কুয়াশায় যাতে বিমান ওঠানামা করতে পারে তার জন্য ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস)-ও বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখনই ৭২ একর না হলেও অবিলম্বে ন্যুনতম ২৮ একর জমি প্রয়োজন। সে কথাও রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। সিংলা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার নিজেদের টাকা খরচ করে জমি অধিগ্রহণে রাজি নয়। তাঁর কথায়, “পরিস্থিতি এ ভাবে চলতে থাকলে এবং ডিজিসিএ তার অবস্থান শিথিল না করলে যাত্রীদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারকে জমি অধিগ্রহণের টাকা বরাদ্দ করতে হবে।” না হলে বন্ধ করতে হবে উত্তর-পূর্বের সব বিমানবন্দরই। |
|
|
|
|
|