আগুন পিছু ছাড়ছে না শহরের। বাজার, বহুতল, হাসপাতালের পরে এ বার আগুন লাগল পেট্রোল পাম্প চত্বরে। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার ব্যস্ততম এলাকা ক্যামাক স্ট্রিটে ঘটনাটি ঘটে। সার্ভিস সেন্টারের কয়েক ফুট দূরে বড় পেট্রোল পাম্পটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কা থেকে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। পাম্প লাগোয়া বেশ কয়েকটি বহুতল, বড় অফিসবাড়ির কর্মীদের কেউ কেউ আতঙ্কে রাস্তায় নেমে পড়েন। পাম্পের অদূরেই বড় একটি শপিং মল। সেখান থেকেও লোকজন বাইরে বেরিয়ে আসেন। এই ঘটনায় পাম্পের এক কর্মী সামান্য আহত হন। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগুন নেভাতে গিয়ে কয়েক জন দমকলকর্মীও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
দমকল জানায়, এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে যায় দশটি ইঞ্জিন। পুলিশ জানায়, কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলার একটি দলকেও সেখানে পাঠানো হয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পেট্রোল পাম্প-সহ গোটা এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। |
পুলিশ জানায়, রাত আটটা নাগাদ ওই পাম্প চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে আগুন লাগে। ওই পেট্রোল পাম্পে একটি গাড়ি কোম্পানির সার্ভিস স্টেশন রয়েছে। গাড়ি মেরামত থেকে সাফাইয়ের কাজও হয়। সেখানেই প্রথমে সার্ভিসিং-এর জন্য আসা একটি গাড়িতে আগুন লাগে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছেন দমকলকর্মীরা। ঘটনাস্থলে রাখা ছিল মোবিল-সহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ। তার ফলে দ্রুত আগুন ছড়ায়। তবে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “পাম্প চত্বরে একটি গাড়িতে আগুন লেগেছিল। প্রথমে পাম্পের কর্মীরাই তা নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন পেট্রোল পাম্পের অফিসেও ছড়িয়ে যায়।”
আগুন ছড়ায় ওই সার্ভিস স্টেশনে দাঁড়ানো কয়েকটি গাড়িতেও। আশপাশের দোকান এবং বহুতলের আলো একে একে নিভিয়ে দেওয়া হতে থাকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি দোকান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি বলেন, “আগুন বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ করেছেন দমকলকর্মীরা। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগুন লাগার সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কতটা মজুত ছিল, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে।”
পুলিশ জানায়, প্রথমে সার্ভিস সেন্টারের কর্মীরাই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে মোবিল, লুব্রিক্যান্ট-সহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সার্ভিস সেন্টারের অফিসঘরে। ততক্ষণে দমকলে খবর চলে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে এক এক করে দমকলের দশটি ইঞ্জিন যায়। পাম্পের নিজস্ব জলাধার ও পাশের বহুতলের জলাধার থেকেও জল নেন দমকলকর্মীরা।
পেট্রোল পাম্প চত্বরের দু’দিকের এলাকা পুলিশ ঘিরে রাখে। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পেট্রোল পাম্প লাগোয়া একটি বহুতল রয়েছে। আগুন পেট্রোল পাম্পে ছড়িয়ে পড়লে ওই বহুতলের বাসিন্দারা যাতে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পারেন, সে জন্য দমকলকর্মী ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদের সেখানে রাখা হয়। ক্যাম্যাক স্ট্রিটে যান চলাচল বন্ধ থাকায় পার্ক স্ট্রিট, লাউডন স্ট্রিট, এজেসি বসু রোড-সহ আশপাশের বেশ কিছু রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়ে। |