কথা ছিল রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়ার। খয়রাশোলের পাঁচড়া পঞ্চায়েতে বসবাসকারী বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে অন্তত তেমনটাই খবর ছিল বলে দাবি করছেন সকলে। অথচ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া দূরে থাক, এখনও বেশ কিছু গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার কাজই শেষ হয়নি। আবার যে সব গ্রামে খুঁটি পোঁতার কাজ হয়ে গিয়েছে বছর খানেক আগে, সেখানে তার টাঙানোর কাজই শুরু করেনি সংশ্লিষ্ট দফতর। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদের প্রশ্ন , “আর কবে আমরা বিদ্যুত সংযোগ পাব?” |
পাঁচড়া পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদিলপুর, পুরশুড়া, জুনিদপুর, আমাজোলা, আহমদপুর, দহল, চাপলা, মুক্তিনগর সহ বিভিন্ন গ্রামেই প্রায় বছর খানেক ধরে কেবল খুঁটি পোঁতা হয়েছে। তাও আবার কোথাও কোথাও মাটিতেই পড়ে রয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান দামোদর বাগদি বলেন, “প্রায় ২৪০০ বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবার বাস করেন আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায়। বছর খানেক আগে বিদ্যুতের খুঁটি আসায় ধরেই নিয়েছিলাম এইবার বিদ্যুত সংযোগ আসছে এই পরিবারগুলিতে। কিন্তু কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। তাই সমস্যা হচ্ছে।”
ইদিলপুর গ্রামের শেখ নজু, পুরশুড়া গ্রামের দিলীপ বাগদি, মুক্তিনগরের শুকদেব হালদার, ঢেড়ো বাজার গ্রামের মুক্তি বাউড়ি, বাসুদেব বাউড়ি বলেন, “যত তাড়াতাড়ি আমরা বিদ্যুত সংযোগ পাই তত ভাল। এভাবে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খয়রাশোলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের সমীর রায়। তিনি বলেন, “শুধু পাঁচড়া অঞ্চলে নয়, গোটা ব্লকেই এক অবস্থা। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও স্পষ্ট উত্তর পাইনি।”
অন্য দিকে, জেলা পরিষদের বিদ্যুত কর্মাধ্যক্ষ সাধন ঘোষও একই সুরে কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদায়ন যোজনার জেলার দায়িত্বে থাকা প্রকল্প আধিকারিক এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে যাতে শীঘ্রই বিদ্যুদায়নের কাজ শেষ হয়। তবে এ পর্যন্ত কাজে গতি আসেনি।” কাজ ঢিলে তালে চলছে, স্বীকার করে নিয়েছেন ওই প্রকল্পের এক আধিকারিক বিশ্বজিৎ বাগদি। তিনি বলেন, “গত ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদ্যুতের খুঁটি গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া, সেগুলি পোঁতার কাজে গাফিলতি করছিলেন দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার। তাঁকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করে আরেকজন ঠিকাদারকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে খয়রাশোলের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা যেমন, নাকড়াবোন্দা, বড়রা সহ একাধিক জায়গায় কাজ চলছে। যদি এলাকাবাসীর সহযোগিতা ঠিকমতো পাওয়া যায় চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই গোটা ব্লকের কাজ শেষ হবে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা ও তার টাঙানো নিয়ে প্রায়ই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ঠিকাদারের লোকজনের মতান্তর হচ্ছে বলে খবর পেয়েছেন তিনি। |