জলসা চলাকালীন তিন যুবককে খুনের ঘটনায় সোমবার নদিয়ার রানাঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কংগ্রেসের আনন্দ দে-সহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের দিকে। পুলিশ এবং তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, ঘটনাটি দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর লড়াই।
রবিবার রাতে রানাঘাটের সুভাষ অ্যাভিনিউয়ে একটি জলসা চলছিল। এক দল সশস্ত্র লোক সেখানে হামলা চালায়। খুন করা হয় অমিত দেবনাথ (২২), দেবাশিস বিশ্বাস (৩০) এবং দেবদাস বর্মন (৩০) নামে ওই তিন জনকে। মৃতেরা সকলেই কংগ্রেসের সমর্থক বলে জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর সিংহ দাবি করেছেন। ওই রাতেই পুলিশ আনন্দবাবুকে গ্রেফতার করে। প্রতিবাদে সোমবার সকালে রানাঘাট থানা ঘেরাও করেন কংগ্রেসের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। ৩৪ নং জাতীয় সড়কেও কিছু ক্ষণ অবরোধ করা হয়। রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |
সরকার পক্ষের আইনজীবী রণেন ধর বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান চলার সময়ে মঞ্চে ছিলেন জনৈক রাকেশ আলি। তাঁকে খুন করতেই ওই হামলা চালানো হয়েছিল বলে ধৃতদের অন্যতম তাপস চৌধুরী অভিযোগ করেছেন।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্করবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে ফের তিন কংগ্রেস কর্মী খুন হলেন।’’ জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, ‘‘মৃতেরা সকলেই কংগ্রেস সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ যাদের ধরেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল।” তাঁর দাবি, “দীর্ঘ দিন ধরেই ওই এলাকায় দু’টি সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিল। তার পরিণতিতেই এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। রাকেশ আলি নামে এক জনকে খুন করার চেষ্টাও হয়েছিল বলে অভিযোগ পেয়েছি। তবে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।’’ রানাঘাটের বিধায়ক ও স্থানীয় পুরপ্রধান তৃণমূলের পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমাজবিরোধী দুই গোষ্ঠীর লড়াই বলেই মনে হচ্ছে।” কিন্তু জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাকেশ আলি দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য ছিলেন বলে তো অভিযোগ উঠেছে? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘আমাদের দলেরও যদি কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’ |