প্রত্যাশা ছিলই। সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানই তা স্পষ্ট করল। শীতের মরসুমে খাদ্যপণ্যের দর কমার হাত ধরেই সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি নেমে এল গত দু’বছরে সবচেয়ে নীচে। ২০১১-র ডিসেম্বরে তা দাঁড়িয়েছে ৭.৪৭%। আর, তার প্রভাবেই ইউরোপের ন’টি দেশের রেটিং কমার প্রভাব ঝেড়ে ফেলে সকালের ১১৭ পয়েন্ট পতন কাটিয়ে দিনের শেষে ৩৫ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। নভেম্বরে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৯.১১%। আর, ২০১০-এর ডিসেম্বরের হার ৯.৪৫%। আগেই রয়টার্স ৭.৫০% মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল, যা আজ প্রকাশিত হিসাবের কাছাকাছি। তবে বিশেষজ্ঞদের ইঙ্গিত, এখনই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পথে না-ও হাঁটতে পারে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতে মূল্যবৃদ্ধির এই হারও যথেষ্ট বেশি। তাদের উদ্বেগ শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের চড়া দাম নিয়ে। ডিসেম্বরে তা বেড়েছে ৭.৪১%। যা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে বিপজ্জনক। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ও বলেছেন, শিল্প ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি কমেছে সামান্য। কাজেই তা এখনও দুশ্চিন্তার কারণ। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি হিসাবে শিল্প পণ্যের গুরুত্ব ৬৫%। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আসন্ন ঋ ণনীতিতে শিল্পে মূল্যবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেবে বলেই জানান প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান রঙ্গরাজনও। তবে তার সামনে এখন অনেক বিকল্প খোলা থাকবে বলে মনে করছেন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া।
|
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া (এআই)-কে আমেরিকার আমদানি রফতানি ব্যাঙ্ক (এগজিম ব্যাঙ্ক)-এর ঋণ দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করল মার্কিন আদালত। এর ফলে আর্থিক সঙ্কটে জেরবার বিমান সংস্থাটির পক্ষে ওই ঋণ পাওয়ার পথ সুগম হল। গত অক্টোবরে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার্স বিমান কিনতে এয়ার ইন্ডিয়াকে মোট ৩৪০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে এগজিম ব্যাঙ্ক। যার বিরুদ্ধে নভেম্বরে মার্কিন আদালতে মামলা করে বণিকসভা ‘এয়ারলাইন্স ফর আমেরিকা’। তাদের যুক্তি ছিল, ভারতীয় সংস্থাকে ওই বিমান কিনতে ঋণ দিলে প্রতিযোগিতার বাজারে বাণিজ্যিক দিক থেকে মার খাবে মার্কিন বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি। তাই এই ঋণ বন্ধের আবেদন করে তারা। সোমবার মার্কিন আদালতটি সেই আবেদন খারিজ করে জানিয়েছে, ঋণ দিলে মার্কিন সংস্থাগুলি ঠিক কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে, তা স্পষ্ট নয়। তাই এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। এ দিকে, এয়ার ইন্ডিয়া ঢেলে সাজতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রী গোষ্ঠী। সেখানে সংস্থা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতামত ছাড়াও বোয়িং ৭৮৭ বিমান কেনা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা।
|
উন্নত দুনিয়ায়, বিশেষ করে ইউরোপের ওপর মন্দার মেঘ ছায়া ফেলা সত্ত্বেও ডিসেম্বরে ভারতের বার্ষিক রফতানি বাড়ল ৬.৭%। ফলে রফতানির পরিমাণ ছুঁয়েছে ২৫০০ কোটি ডলার। ইউরোপ-আমেরিকায় চাহিদা ঢিমেতালে বাড়ার কারণেই তা আশার তুলনায় অনেক কম হলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা নিয়ে আশাবাদী বাণিজ্য সচিব রাহুল খুল্লার। চলতি অর্থবর্ষের জন্য এই লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার কোটি ডলার। নভেম্বরে রফতানি বেড়েছিল আরও কম হারে, ৩.৮%। ডিসেম্বরে আমদানি ১৯.৮% বেড়ে হয়েছে ৩৭৮০ কোটি ডলার। যার জেরে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি ১২৮০ কোটি ডলারে। এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের হিসেব ধরলে রফতানির অঙ্ক ২১,৭৬০ কোটি ডলার। এই ন’মাসে বৃদ্ধি ২৫.৮%। প্রসঙ্গত, জুলাইয়ে সর্বোচ্চ ৮২% বৃদ্ধির মুখ দেখেছিল রফতানি। তার পর থেকে বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তায় তা পড়ছে। খুল্লার মন্তব্য করেছেন, “২০১১ সাল যে কঠিন সময় ছিল, তা আগেই বলেছি। ২০১২-য় আরও কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।”
|
নারায়ণ জৈন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার্সের সেক্রেটারি জেনারেল হয়েছেন। আয়কর আইনজীবী হওয়া ছাড়াও তিনি এই সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন বই লিখেছেন। |