|
|
|
|
লক্ষ্য: সীমান্ত সমস্যার সমাধান |
ভারত-চিনের নয়া যৌথ প্রতিনিধি দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কূটনৈতিক শৈত্য কাটিয়ে সীমান্ত সমস্যার সমাধানের পথে এক কদম এগোলো ভারত ও চিন। আজ থেকে শুরু হয়েছে দু’দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে সীমান্ত আলোচনা। সীমান্তের ছোটখাটো অশান্তি যাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে না পারে, সে জন্য নতুন যৌথ মেকানিজম তৈরির বিষয় চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী কাল বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লি এবং বেজিং-এর মধ্যে চুক্তি সই হওয়ার কথা।
ভারতের তরফে এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন এবং চিনের বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন, সে দেশের ‘স্টেট কাউন্সিলর’ জাই বিনগুয়া। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, দু’দেশের সম্পর্ক সম্প্রতি যে পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, তাতে সীমান্ত আলোচনাই অনিশ্চিত বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় তথা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন বিশেষ ভাবে সক্রিয় হন যাতে গত বারের মতো এ বারেও আলোচনার উদ্যোগ না ভেস্তে যায়। কাজটি সহজ ছিল না। কারণ, দক্ষিণ চিন সাগরে তেল বিতর্ক থেকে শুরু করে চিনের মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশ ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা তো ছিলই। এর পর গত বছর নভেম্বরের শেষে দলাই লামাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। সীমান্ত আলোচনার দিন ঘোষণা করেও পিছিয়ে যান চিন নেতৃত্ব। তারপর চিনের ইয়ুং প্রদেশে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উপর নির্যাতন, অরুণাচলের বাসিন্দা বায়ুসেনার এক অফিসারকে চিনের ভিসা দিতে অস্বীকার করাএই একের পর এক ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে ভারতের এক সেনাপ্রতিনিধিদলকে বেজিং না-পাঠানোরই সিদ্ধান্ত নেয় সাউথ ব্লক। পরে কাটছাঁট করে ওই সফর বহাল রাখা হয়।
কিন্তু সেই তিক্ততাকে সরিয়ে রেখে সীমান্ত-বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট দৃঢ়তা দেখিয়েছে মনমোহন সরকার। এশিয়ার বৃহত্তম শক্তি হিসাবে চিনের গুরুত্ব অস্বীকার করা একেবারেই সম্ভব নয় ভারতের পক্ষে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য শক্তিগুলির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নেও বেজিংয়ের সঙ্গে কিছুটা সখ্যতা রাখারও প্রয়োজন রয়েছে। চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এগিয়ে নিয়ে যেতেও উদ্যোগী মনমোহন সরকার। আজকের আলোচনায় স্থির হয়েছে, শুধুমাত্র সামরিক স্তরেই নয়, রাজনৈতিকভাবেও সীমান্ত সমস্যার মোকাবিলা করবে দুই দেশ। দু’দেশের সংসদীয়, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্তাদের নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল গঠন করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ভারতের তরফ থেকে এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বিদেশ মন্ত্রকের পূর্ব এশিয়া বিভাগের যুগ্ম সচিব। চিনের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন সীমান্ত বিভাগীয় দফতরের ডিজি। প্রত্যেক দিনই দু’দেশের এই প্রতিনিধি দলের মধ্যে যোগাযোগ থাকবে। |
|
|
|
|
|