আস্থা ভোটে জয় গিলানির, তবু ‘কাঁটা’ সেই আদালতই
সেনা-সুপ্রিম কোর্টের দ্বৈত চাপে কোণঠাসা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ভরসার জায়গা ছিল একমাত্র আস্থা ভোট। নিরাশ করেনি পার্লামেন্ট। বিপুল ভোটে জিতলেন তিনি। তবু রয়েই গেল শীর্ষ আদালতের কাঁটা। এবং সরকারের ভবিষ্যতের সামনে এক বিরাট প্রশ্নচিহ্ন।
আজ সকালেই প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠায় পাক সুপ্রিম কোর্ট। গিলানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালু করেননি। আদালতের নোটিস পেয়েই গিলানি প্রেসিডেন্ট জারদারি ও পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র শরিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসে পড়েন। শরিকেরা তাঁকে পরামর্শ দেন, আদালতের নির্দেশ মেনে ১৯ জানুয়ারি কোর্টে সশরীরে হাজিরা দিতে। সূত্রের খবর, শুধু হাজিরাই নয়, শীর্ষ আদালতের সামনে নিঃশর্ত ক্ষমাও চাইবেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শরিকদের সঙ্গে বৈঠকের আগে জারদারি-গিলানি। সোমবার ইসলামাবাদে। ছবি: এ এফ পি।
আজ পার্লামেন্টের আস্থাভোটে প্রায় সব দলের সাংসদেরাই ‘গণতন্ত্র ও সংবিধানের’ সপক্ষে আস্থাভোট দেন। এই জয়কে ‘ব্যক্তিগত’ জয় হিসেবে দেখাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্ট ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ধারাবাহিক তরজা চলাকালীন গিলানি সমানে বলে চলেছেন, তাঁর সরে দাঁড়ানোতেই যদি সরকার ও পার্লামেন্টের ভিত মজবুত হয়, সে ক্ষেত্রে তিনি পদত্যাগে রাজি। পাক কূটনীতিকদের ধারণা, সেনা ও সুপ্রিম কোর্টকে চাপে ফেলতে এটা আসলে গিলানির দলের ‘পাল্টা চাল’। এতে ‘প্রধানমন্ত্রী গিলানির’ আর আদালতে জবাবদিহি করার কোনও দায় থাকবে না।
প্রাক্তন পাক সেনাশাসক পারভেজ মুশারফের আমলে জারদারির বিরুদ্ধে চলা বেশ কিছু দুর্নীতি-মামলা অর্ডিন্যান্স করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে তখন দেশে ফিরতে পেরেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও তাঁর স্বামী আসিফ আলি জারদারি। দু’বছর পরে ২০০৯-এ ওই অর্ডিন্যান্সকেই খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। এবং জানিয়ে দেয় মামলাগুলি ফের শুরু করা হবে। এই বিষয়েই বেশ কিছু দিন ধরে গিলানি সরকারের উপর চাপ দিচ্ছিল আদালত। কিন্তু গিলানি-সরকার এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিল। মামলা চালু করার জন্য যে সময়সীমা সুপ্রিম কোর্টে নির্ধারণ করেছিল, আজই তা শেষ হল। এর মধ্যে কোনও পদক্ষেপ না করায় গিলানিকে ‘অসৎ’ বলে আক্রমণ করে আদালত। সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, মামলাগুলি ফের শুরু না করলে আদালত ‘চরম’ ব্যবস্থা নেবে। আজ তারই প্রথম পদক্ষেপ করল তারা।
আজই শুরু হল মেমোগেট-কাণ্ডের শুনানিও। তবে শুরুতেই এক ধাক্কায় তা পিছিয়ে গেল ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। সাক্ষ্য দিতে আসার কথা ছিল পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজের। যদিও এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন না তিনি। পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে আমেরিকার প্রাক্তন পাক-রাষ্ট্রদূত হক্কানির লেখা ‘গোপন স্মারকলিপি’ ফাঁস করে দেন এই ইজাজই। পরে তিনি আরও দাবি করেন, হক্কানির আড়ালে রয়েছেন জারদারি। তাঁর হয়েই হক্কানি সে দিন ওই স্মারকলিপি লিখেছিলেন। সেনা-আদালতের সঙ্গে গিলানি সরকারের এই টালবাহানার মধ্যে মুশারফ আজ ফের জানিয়েছেন, “এখন আমরাই একমাত্র দেশে একটা বিকল্প সরকার গড়তে পারি।”
এত সব অনিশ্চয়তার মধ্যে এখন একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্যস্ত কূটনীতিকরা। গিলানি শীর্ষ আদালতের সামনে হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চাইলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জারদারির বিরুদ্ধে মামলাগুলো চালু করতে হবে তাঁকে। তখন কী ভাবে প্রধান শাসক দল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা টিঁকিয়ে রাখবে পিপিপি?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.