নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
গ্রামে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র চাই। এই দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের নিস্তা গ্রামে চলছিল সরকারি পরিষেবা বয়কট। রবিবার গ্রামে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন ব্লকের স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তারা। ঘণ্টা খানেক ধরে তাদের ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত গ্রামে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করার বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।
পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সদস্য শত্রুঘ্ন মণ্ডল বলেন, “১৯৮০ সালে গ্রামে একটি ভাড়া ঘরে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হয়েছিল। বছর দশেক চলার পরে পাকা বাড়ি না পাওয়ায় তা তুলে নিয়ে যাওয়া হয় জরুর গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনে। সেখান থেকে দু’বছর আগে তা আবার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রঘুনাথগঞ্জ সদর লাগোয়া বাহাদিনগর গ্রামে। কিন্তু নিস্তা থেকে সেখানে যাওয়ার জন্য কোনও পথ নেই। ওই গ্রামে যেতে একটি খাল পার হতে হয়। খালে আগে বাঁশের সাঁকো ছিল।
এখন তাও ভেঙে গিয়েছে। ফলে জলের মধ্যে দিয়েই চলছে যাতায়াত।” হাজার পাঁচেক মানুষের বাস ওই গ্রামে। ৯ জানুয়ারি থেকে গ্রামবাসীরা আইসিডিএস কেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুল-সহ সমস্ত সরকারি পরিষেবা বয়কট শুরু করেন। রবিবার সেখানে যান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ব্লকের যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক। গ্রামে যেতেই শুরু হয় বিক্ষোভ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সম্প্রতি গ্রামে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য জমি খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ভগীরথ মণ্ডল বলেন, “গ্রামে পাঁচ হাজার মানুষের বাস। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ কিমি পথ পেরিয়ে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে টীকাকরণের জন্য। চরম অসুবিধা হচ্ছে। বহু গভর্বতী সেখানে যেতেও পারছেন না। কোনও রাস্তা নেই। ফলে নেই যানবাহনও। সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ফের চালু করার উদ্যোগ করেছে। সেইমতো একটি সরকারি জমিতে ৮ শতক জায়গার উপর কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা সরকারি পরিষেবা বয়কটে সামিল হয়েছেন।” গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী ভরত মণ্ডল বলেন, “রবিবার স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তারা দীর্ঘ বৈঠকের পরে গ্রামে ফের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, “গ্রামবাসীদের দাবির ব্যাপারে স্ব্যস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক সময়ে গ্রামে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল। সেটা কেন উঠে গেল বা কী অবস্থায় রয়েছে সব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ওরাও বয়কট তুলে নিয়েছেন। আশা করছি সোমবার থেকে আবার গ্রাম স্বাভাবিক হবে। ” |