|
|
|
|
মারধর করে মহিলার বাড়ি দখল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর এবং জিনিসপত্র লুঠপাটের পর এক মহিলাকে মারধর করে তাড়িয়ে বাড়ি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার শিলিগুড়ির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভক্তিনগর থানা এলাকার প্রকাশনগরে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের স্বামী এবং তাঁর লোকজনরাও জড়িত বলে অভিযোগ। এ দিন ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করেন নিগৃহীতা মহিলা সায়রা বেগম। জখম অবস্থায় তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর দাবি, প্রকাশনগরে যেখানে তিনি বসবাস করেন ২৫ কাঠা ওই জমি খাস জায়গা। তাঁর স্বামী যে মালিকের গাড়ি চালাতেন তিনিই এক সময় ওই জায়গায় তাঁদের থাকতে দিয়েছিলেন। এর পর গত ২৫ বছর ধরে তাঁরা এখানে বসবাস করছেন। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি এখন সায়রা বেগমদের উচ্ছেদ করে জমি ফেরত চাইছেন। এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর রাগিণী সিংহ এবং তাঁর স্বামী মঞ্জয়বাবুর মদতেই সম্প্রতি জমি মাফিয়াদের নিয়ে ওই জায়গা দখল করতে সক্রিয় হয়েছেন। জায়গা না ছাড়লে বারবার বাড়িতে ঢুকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে সায়রা বেগম পুরসভা থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তাতে কাজ হয়নি। যাঁদের বিরুদ্ধে নাম করে এ দিন তিনি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের সংখ্যা লঘু সেলের শিলিগুড়ি শহর কমিটির চেয়ারম্যান সরতাজ হোসেনের নামও রয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ভক্তিনগর থানার ওসির সঙ্গে কথা বলব। কী হয়েছে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রাগিণীদেবী তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ওই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গোলমাল চলছে। কাউন্সিলর হওয়ার সুবাদে আগেও সমস্য মেটাতে গিয়েছিলাম। প্রকৃত জমির মালিক বলে দাবি করে আরেক জন ওই জায়গা উদ্ধার করতে চাইছেন। তা নিয়ে দুই পক্ষের গোলমাল চলছে। আমরা এর মধ্যে নেই।” একই কথা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী মঞ্জয়বাবুও। হাসপাতালের শয্যাশায়ী সায়রা বেগম মারধরের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি জানান, স্বামী দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন। মাঝে মধ্যে আসেন। লোকের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান। এ দিন তিনি কাজে গেলে কাউন্সিলরের স্বামী-সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়িতে ছোট এক ছেলে দুই মেয়ে, বড় ছেলের স্ত্রী ছিল। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে কিল, ঘুষি মারতে শুরু করে অভিযুক্তরা। কেন জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন না সেই কথা বলে মাটিতে ফেলে কয়েকজন পেটে লাথিও মারে বলে অভিযোগ। সায়রা বেগম বলেন, “সেখান থেকে পালিয়ে থানায় যাই। সেখানে সমস্যা মেটানোর নাম করে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাকে জায়গা ছেড়ে দিতে অভিযুক্তরা চাপ দেয়। ১ কাঠার বিনিময়ে বাকি জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি বলে কাগজে সই করতে বলে। তাতে রাজি না-হওয়ায় দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।” পরিচিতরা গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের শিলিগুড়ি শহর কমিটির চেয়ারম্যান সরতাজ হোসেন বলেন, “মহিলাকে লোকজন বিরক্ত করছেন বলে তিনি আমার কাছে এসেছিলেন। এলাকায় গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছিলাম। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ হয়েছে বুঝতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|