|
|
|
|
প্রতিভা খুঁজতে লাল-হলুদ উদ্যোগ |
সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
এক দিকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, অন্য দিকে জলপাইগুড়ির ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাব! মণিলাল ঘটক, রুনু গুহঠাকুরতাদের পুরানো শহরকে ফুটবলে বাঁচিয়ে তুলতে এ বার আলাদা ভাবে সচেষ্ট হল দুই পক্ষই।
জলপাইগুড়ি জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ফুটবল জনপ্রিয় করা এবং সেখান থেকে ফুটবল প্রতিভা তুলতে কোচিং সেন্টার চালু করছে ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাব। মফ্ফসলের ঘুঘুডাঙা স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে তারা ওই সেন্টার গড়ছে। রবিবার ফ্যানস ক্লাবের বর্ষপূর্তির দিনে এ ব্যাপারে দু’পক্ষের চুক্তি হয়। ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাবের তরফে কোচিং সেন্টারের জন্য ঘুঘুডাঙা স্পোর্টিং ক্লাবকে প্রাথমিক ভাবে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। কোচিং সেন্টারের ফুটবলারদের জার্সি, বুট, ফুটবল কেনা, চিকিৎসা-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর জন্য ওই টাকা খরচ করা হবে।
আপাতত প্রশিক্ষণ দিতে এখানে মাঝে মধ্যে আসবেন প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার তথা ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক শ্যামল ঘোষ। পরবর্তীতে অন্যান্য অভিজ্ঞ কোচদেরও আনা হবে। জলপাইগুড়ি ইস্টবেঙ্গল ফ্যানস ক্লাবের কর্মকর্তাদের অন্যতম ভাস্কর গুহমজুমদার বলেন, “২০০৫ সালে ফ্যানস ক্লাব তৈরির পর থেকেই আমাদের একটা স্বপ্ন রয়েছে। তা হল জেলার ফুটবলের উন্নয়নে কিছু করা। বিশেষ করে একটা কোচিং সেন্টার চালু। আমাদের একার পক্ষে সেটা সম্ভব হয়ে উঠছিল না। ঘুঘুডাঙা স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল কোচিং সেন্টার এগিয়ে আসায় তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এতে প্রত্যন্ত এলাকার তরুণদের ফুটবল খেলতে উৎসাহী করা সম্ভব হবে। তেমনই ফুটবল প্রতিভা তুলে আনা সম্ভব হবে।” সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ঘুঘুডাঙা কোচিং সেন্টারের কর্মকর্তা রাজীব ভট্টাচার্য এবং অন্যরা। কী কী ব্যবস্থা থাকবে ওই কোচিং সেন্টারে? কর্মকর্তারাই জানান, অনূর্ধ্ব ১৭ বছরের ফুটবলারদের বেছে কোচিং করানো হবে। ঘুঘুডাঙা হাই স্কুলের মাঠেই ওই প্রশিক্ষণ হবে। স্কুলের সঙ্গেও তাঁদের চুক্তি রয়েছে বলে দাবি। আবাসিক শিবির না থাকায় আপাতত যে সমস্ত এলাকা থেকে উৎসাহীরা যাতায়াত করে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন তাদেরই নেওয়া হবে। পরবর্তীতে আবাসিক ফুটবল অ্যাকাডেমির ধাঁচে একে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ৪০ জনকে বেছে ২ বছর করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
একসময় মণিলাল ঘটক, রুনু গুহঠাকুরতা, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দিকপাল ফুটবলাররা এই জেলা থেকে উঠে এসেছেন। পুষ্টিকর খাবার, অভিজ্ঞ কোচের অভাব, সরঞ্জাম না-থাকা এখানকার প্রত্যন্ত এলাকার উঠতি প্রতিভাদের বড় ফুটবলার হওয়ার পথে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিভা বাছতে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে ইস্টবেঙ্গল রাজগঞ্জ ওয়েলফেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমি চালু করেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। গত দু’দিন ধরে জলপাইগুড়ির টাউন ক্লাবে ফুটবলকে কেন্দ্র করেই বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষে যুব উৎসব করলেন তাঁরা। তাতে সামিল হয় রাজগঞ্জের ফুটবল অ্যাকাডেমি এবং জলপাইগুড়ি টাউন ক্লাব।
শনিবার এবং রবিবার ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলের সঙ্গে ম্যাচ হয় রাজগঞ্জ ফুটবল অ্যাকাডেমি এবং বীরপাড়ার লংটার্ম নন রেসিডেন্সিয়াল কোচিং স্কিম দলের। শনিবারের ম্যাচে হেরে যায় ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দল। রবিবার তারা ড্র করে বীরপাড়ার আদিবাসী ফুটবলারদের সঙ্গে। তাতে এখানকার ফুটবল নিয়ে প্রশংসা করেন ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তা বীরেন্দ্র কুমার সাহা। বীরেন্দ্রবাবু বলেন, “অল্প সময়েই এখানকার অ্যাকাডেমির ছেলেদের খেলার উন্নতি হয়েছে। আমাদের জুনিয়র দলে অনেককে সুযোগ করে দেব।” তা ছাড়া অংশগ্রহণকারী দলগুলির ফুটবলার, টাউন ক্লাবের কর্মকর্তা, শহরের ফুটবল প্রেমীদের নিয়ে যুব সমাজকে মাঠমুখি করার আহ্বান জানিয়ে এ দিন র্যালি বার করেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|