বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বার বার আবেদন সত্ত্বেও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। লোকসান ঠেকাতে বিদ্যুৎ চুরি বন্ধের অভিযান জোর ধাক্কা খেয়েছে মগরাহাটে। অথচ, আরামবাগে বছর খানেক ধরে লাগাতার অভিযান চালিয়ে বিদ্যুৎ চুরি রুখতে অনেকটাই সফল হয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। এমনটাই দাবি করে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এক বছরে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে। জরিমানা ধার্য করা হয়েছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে আদায়ও হয়েছে। চুরি কম হওয়ায় বিদ্যুৎ কিনতেও হচ্ছে কম। গত এক বছরে আয় বেড়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা।
দু’ভাবে বিদ্যুৎ চুরি হয়। হুকিং এবং মিটারে কারচুপি করে। হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি হয় আরামবাগেও। কিন্তু পরিমাণে কম (৫ শতাংশ)। মিটারে কারচুপি করে এই মহকুমায় বিদ্যুৎ চুরির হার বেশি বলে জানিয়েছেন সংস্থার কর্তারা। সে জন্যই হুকিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে জোর না দিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনের আধিকারিকেরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন মিটারে কারচুপি রোখার দিকে। তাতেই সাফল্য আসছে বলে তাঁদের দাবি।
প্রথম দিকে অবশ্য প্রথামাফিক পুলিশ নিয়ে হুকিং-বিরোধী অভিযানই চলছিল আরামবাগে। কিন্তু অভিযান চালাতে গিয়ে যথারীতি এল প্রতিরোধ। ‘ছক’ পাল্টালেন বিদ্যুৎ-কর্তারা। মিটারে কারচুপি ধরতে শহর-গ্রামের বাড়ি, দোকান, চালকল প্রভৃতি জায়গায় শুরু হল অভিযান। বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনের কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের হিসেবে, আরামবাগ ডিভিশনে বিদ্যুৎ-গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় প্রায় ৩০ মিলিয়ন ইউনিট। চুরি যায় ১০ মিলিয়ন ইউনিট। লোকসান প্রায় ২ কোটি। ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ ডিভিশন বিদ্যুৎ কিনেছে ১৪৪ কোটি টাকার। তখন গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় হয়েছিল ৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ৫৪ শতাংশ টাকাই অনাদায়ী ছিল। ২০১০ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। গ্রাহক বাড়লেও চুরি কিছুটা আটকাতে পারায় বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে কম, ১৩৫ কোটি টাকার। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় এ বছর বিদ্যুৎ কেনার খাতে বাঁচছে ৯ কোটি টাকা। চুরি কমিয়ে আদায় বেড়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা (মোট আদায় ৭০ কোটি টাকা)। লোকসান ৫৪ থেকে কমে হয়েছে ৪৫.৫ শতাংশে। |