রায়মঙ্গল, ঝিলা, বাঘনা, কালিন্দী ও গোমতি নদীর সংগমস্থলে সুন্দরবনের হেমনগরে মকরসংক্রান্তির পুণ্যতিথিতে রবিবার স্নান সারলেন অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয় মানুষ জায়গাটিকে বলেন ‘কল্পগঙ্গা’। স্নান উপলক্ষে নদীর ধারে বহু ভক্ত এসেছেন। ছোট ছোট তাঁবু পড়েছে। সাধুসন্তের ভিড়ও আছে। নৌকো কিংবা গাড়িতে লোকজন এসেছেন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। সব মিলিয়ে মেজাজে যেন ছোটখাট গঙ্গাসাগর। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত ও দরিদ্র এই এলাকার মানুষ ইচ্ছে থাকলেও গঙ্গাসাগরে যেতে পারেন না। তার একটা কারণ যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা। অন্য কারণটা অবশ্যই অর্থ। এ সব দেখেশুনে স্থানীয় কিছু মানুষ কয়েক বছর আগে ‘কল্পগঙ্গা’ নাম দিয়ে এখানে পুণ্যস্নানের ব্যবস্থা করেন। তারপর থেকে প্রতি বছরই এই এলাকায় স্নানের জন্য আগত পুণ্যার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামের মানুষের কাছে স্নান উপলক্ষে উৎসবের আকর্ষণও কম নয়।
মেলা প্রাঙ্গণে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রমের আদলে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। মন্দির প্রাঙ্গণে সারা দিন ধরে চলে নাম সংকীর্তণ, ভগবৎ পাঠ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। রবিবার সকালে যোগেশগঞ্জ বাজার থেকে স্থানীয় মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। স্নানের সময় দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য নদীতে স্পিডবোট রাখা হয়েছিল। বিএসএফ এবং বনকর্মীরা তাতে টহল দিয়েছেন।
হাসনাবাদে ইছামতী পেরিয়ে বাস বা ট্রেকারে যেতে হয় দুলদুলিতে। এরপরে সাহেবখালি নদী পেরিয়ে লেবুখালি থেকে ট্রেকার কিংবা অটোতে চেপে সোজা হেমনগরে পাঁচ নদীর সঙ্গমস্থলে পৌঁছনো যায়। কল্পগঙ্গা সাগর মেলা কমিটির সম্পাদক প্রভাসচন্দ্র নস্কর বলেন, “দুই ২৪ পরগনা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে মানুষ স্নান উপলক্ষে এখন ভিড় করেন হেমনগরে। সুন্দরবন এলাকার ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে মেধা পুরস্কার এবং কৃষকদের উৎসাহিত করতে সেরা ফসলের পুরস্কার দেওয়া হয় বলে জানালেন তিনি। |