সিপিএমের একটি শাখা অফিস থেকে তিনটি ‘বোমা’ উদ্ধার করল পুলিশ।
নদিয়ার গয়েশপুরের গোকুলবাজারে সিপিএমের ওই শাখা দফতরটি মাস ছ’য়েক বন্ধ ছিল। রবিবার সিপিএমের স্থানীয় কয়েকজন সদস্য পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সেই ঘরের তালা খুলতে যান। সেটা চোখে পড়ে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর। তাঁরাও সঙ্গে সঙ্গে চলে আসেন ওই ঘরের সামনে। তৃণমূল কর্মীরা দাবি করেন, তাঁদের সামনেই ঘরের তালা খুলতে হবে। সিপিএম কর্মীরা তাতে রাজি ছিলেন না। তখন গমগম করে চলছে রবিবারের বাজার। তার মধ্যেই দু’পক্ষের তর্কাতর্কিতে আশপাশে জমতে শুরু করে আরও অনেক লোক। কিছু ক্ষণ পরে সিপিএম কর্মীরা একে একে এলাকা ছেড়ে চলে যান বলে অভিযোগ। তৃণমূলের গয়েশপুর শহর কমিটির সভাপতি সমীর ঘোষ বলেন, “আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ করার জন্য সিপিএম ওই পার্টি অফিসে বোমা জড়ো করে রাখত। এ দিন হঠাৎই ওরা অফিস খুলতে আসে। আমাদের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দেখে ইতস্তত করতে থাকে। তারপর একে একে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এতেই সকলের সন্দেহ হয় ও পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।”
এরপরেই পুলিশ গিয়ে এলাকার লোকজনের সামনে তালা ভেঙে ওই ঘরে ঢোকে। ঘরের ভিতর থেকে পাওয়া যায় তিনটি ‘বোমা’। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, “সিপিএমের ওই অফিসটি বাইরে থেকে বন্ধ করা ছিল। তার ভিতর থেকে তিনটি বোমা’র মতো জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি ঠিক কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তবে সিপিএমের কল্যাণী জোনাল কমিটির সম্পাদক পার্থ ভট্টাচার্য বলেন, “পার্টি অফিসের মধ্যে বোমা রেখে দিয়েছিল তৃণমূলের সদস্যরাই।” কিন্তু তালাবন্দি ঘরে কী করে অন্য কেউ ঢুকে ‘বোমা’ রাখতে পারে? পার্থবাবুর দাবি, “আমরা যে তালাটা লাগিয়েছিলাম, সেটা ভেঙে ভিতরে ঢুকে বোমা রেখে ওরা অন্য তালা লাগিয়ে দেয়। সেই কারণেই আমাদের কর্মীরা গিয়ে তাঁদের কাছে রাখা চাবি দিয়ে তালাটা খুলতে পারেননি। তাই তাঁরা চলে এসেছিলেন।” গয়েশপুরের পুরপ্রধান সিপিএমের গোপাল চক্রবর্তীও বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “দীর্ঘ ৬ মাস তৃণমূলের ভয়ে পার্টি অফিস বন্ধ ছিল। এ দিন আমাদের কয়েকজন কর্মী সেটি খুলতে গেলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা হয়। তারপরে শুনি ওরা প্রচার করছে অফিসে বোমা রাখা আছে। কিন্তু আমরা অফিসে বোমা রাখব কেন?” তৃণমূল নেতা সমীরবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “ওই ঘরে বোমা রেখেছিলেন সিপিএম কর্মীরাই। এখন ধরা পড়ে আমাদের উপরে দোষ চাপাতে চাইছেন। তালা ভাঙার অভিযোগও মিথ্যা।” |