|
|
|
|
অবহেলায় আয়তনে অর্ধেক ফাটাপুকুর |
আসে না পরিযায়ী, দাবি জলা সংস্কারে |
সিদ্দিক হোসেন • রাজগঞ্জ |
একসময়ে শয়ে-শয়ে পরিযায়ী পাখি দেখা যেত। কিন্তু, সংস্কারের অভাবে পুকুরের এমন হাল যে এখন শ’চারেকের বেশি পাখির দেখা মেলে না। তাই ক্রমশ হতশ্রী হয়ে পড়া রাজগঞ্জের ফাটাপুকুর সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রাস্তায় ফাটাপুকুর মোড়ের পাশেই ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই ৮৫ বিঘে জমি জুড়ে ছিল পুকুর। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সংস্কারের অভাবে পুকুরের আয়তন কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ বিঘের মতো। বর্তমানে পুকুরের দেখাশোনার দায়িত্বে মৎস্য দফতর। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, পুকুরের দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে আগামীতে তার কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। অভিযোগ, সব দফতরেই বহুবার দাবি জানিয়েও পুকুরের সংস্কার করার ব্যাপারে উদ্য্যেগ নেওয়া হচ্ছে না। রাজগঞ্জের যুগ্ম বিডিও খুরশেদ আলম বলেন, “পুকুরটি মৎস্যজীবীদের একটি সমবায় সমিতি লিজে নিয়েছে। তাই দায়িত্ব ওই সমবায় সমিতির।” সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান সুরেশ সরকার জানান, তাঁদের পুকুর সংস্কার করার মতো আর্থিক সাধ্য নেই। তিনি বলেন, “পুকুরের লিজ নিলেও সরকার থেকে কিছু পাচ্ছি না। যা মাছ পেয়ে থাকি তা বিক্রি করে পেট চালানোই দায়। কী ভাবে সংস্কার করব! চাষের জন্য মাছের পোনাও পাই না। নিজেদের পোনা কিনে ছাড়তে হয়। অথচ লিজ নেওয়ার সময় সব রকমের সাহায্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।” মৎস্য দফতরের কর্তৃপক্ষ সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, সংস্কারের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনে একটি পরিকল্পনা জমা দেওয়া রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ হবে। স্থানীয় পানিকৌড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসিতকুমার সরকার বলেন, “পুকুরটির সংস্কার হলে আরও বেশি করে পরিযায়ী পাখি ভিড় জমাবে। আমরা সংস্কারের ব্যাপারে ব্লক প্রশাসন ও মৎস্য দফতরে বহুবার দাবি জানিয়েছি। কোনও কাজ হচ্ছে না।” একই দাবি করেছেন, রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সত্যেন মণ্ডল। তিনি বলেন, “পুকুরের সংস্কারের ব্যাপারে আমরাও উদ্যোগ নিয়েছিলাম। জমিটি আরআরএল দফতরের হওয়ায় সরাসরি কিছু করতে পারছি না।” এলাকার জয় পাল, অলোক পাল, নয়ন রায়রা পরিযায়ী পাখিদের যাতে ক্ষতি না-হয় সে জন্য নজরদারি চালান। তাঁরা বলেন, “ওই পাখিরা আমাদের অতিথি। কাউকে মারতে দিই না। পুকুরটির যা হাল, তাতে পাখি কমে যাচ্ছে।” সে জন্য বাসিন্দারা দ্রুত পুকুরের সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “শীতে উত্তরবঙ্গের জলাশয়ে বিভিন্ন ধরনের পারিযায়ী পাখিরা সেগুলি সংরক্ষণের ব্যাপারে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। জেনে ভাল লাগল যে ওখানকার মানুষ পাখিদের উপর নজর রেখেছে। আমরা এই নিয়ে জেলা প্রশাসনে কথা বলব।” |
|
|
|
|
|