নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তিন পয়েন্ট আর ম্যাড়ম্যাড়ে ড্র-এর মধ্যে ফারাক ছিল মাত্র ছ’গজের। শেষ বাঁশি বাজতে তখন অপেক্ষা কয়েক সেকেন্ডের মাত্র।
টোলগের শট মরিয়া ঝাঁপে গোলে ঢুকতে দিলেন না ইস্টবেঙ্গলের সেই প্রাক্তন অধিনায়ক। যিনি গত পয়লা বৈশাখ ইস্টবেঙ্গল মাঠে অধিনায়ক হিসাবে বারপুজো করেও লাল-হলুদ দলে জায়গা পাননি। অভ্র মণ্ডল।
টানা আট ম্যাচ অপরাজিত পুণে এফসি। আর সুব্রত পালের বদলি অভ্র ডেরিক পেরেরার দলকে যথেষ্ট নির্ভরতা দিয়েছেন গোলের নীচে। শনিবার সন্ধ্যাতেও দিলেন। জেজে-কেইতারা যে ম্যাচে তিন পয়েন্ট প্রায় তুলেই ফেলেছিলেন পুণে শিবিরে, সেই ম্যাচই আচমকা শেষ মুহূর্তে তাঁরা হারতে বসেছিলেন। কিন্তু টোলগের পা থেকে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে পুণের মানরক্ষা করলেন ইস্টবেঙ্গলের বাতিল গোলকিপার অভ্র-ই। তার আগে অবশ্য জেজে-আরাতারা এক রকম নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের। বাঁচিয়ে দিল দু’টি ফ্যাক্টর। একটি আবেগ, অন্যটি বাস্তব। আবেগ হল, কলকাতা লিগের গত দুই ম্যাচের মহাবিপর্যয়ের কালো ছায়া আই লিগের ম্যাচে ফিরতে না দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা। আর বাস্তব, পঞ্জাব তনয় গুরপ্রীত সিংহের নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়া পারফরম্যান্স। ম্যাচের সেরাও তিনি। গোলকিপার নিয়ে যে দোনোমনো মর্গ্যানের মধ্যে ছিল সেটা হয়তো এ বার কেটে যেতে পারে।
ম্যাচ ছ’মিনিট গড়াতেই যুবভারতীর ছবি দেখা গেল শিব ছত্রপতি স্টেডিয়ামে। হঠাৎ এক দিকের ফ্লাডলাইট স্তম্ভের আলো নিভে গিয়েছিল। জ্বলল দশ মিনিট পর। রেফারি সাজি কুরিয়ান ইনজুরি টাইম দিলেন মোট ১২ মিনিট। সে সময়েই দু’বার ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ভাঙলেন জেজেরা। ছন্নছাড়া লাল-হলুদ ফুটবলারদের মধ্যে একমাত্র আলো গুরপ্রীতই। যাঁর দক্ষতায় এক পয়েন্ট পেয়ে ইস্টবেঙ্গল ১৪ ম্যাচে ২৭ পয়েন্টে। আপাতত ডেম্পোর ঠিক নীচে দুই নম্বরে।
পুণের গোটা আটেক ‘অন-টার্গেট’ শট গুরপ্রীত বাঁচালেন। যার মধ্যে পাঁচটি পুরোপুরি শরীরকে টানটান করে। কখনও বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে, কখনও ডান দিকে। প্রথমার্ধে জেজে-লেস্টার-কর্মাদের শট যখন বাঁচাচ্ছেন গুরপ্রীত, অভ্র তখন নিশ্চিন্তে নিজেদের গোলপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে। পেন আর ভাসুম ছাড়া লাল-হলুদের সবাই তখন নিজেদের ফর্মের খোঁজ করছেন। ব্রিটিশ কোচ মর্গ্যান মাঝমাঠের দখল নিতে পাঁচ মিডফিল্ডার খেলিয়েছিলেন। কিন্তু বিপক্ষের লেস্টার-বলদীপ-ডুহু ত্রয়ীর দাপটে মর্গ্যানের ছক ফের আর এক বার সাফল্যের মুখ দেখল না। ম্যাচের এক ঘণ্টার মাথায় সুশান্ত ম্যাথুকে তুলে মর্গ্যান নামান সঞ্জু প্রধানকে। সেই সময় থেকে কিছুটা ছন্দে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলকে। এক বার টোলগে বক্সের মধ্যে পড়ে গেলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি।
দাঁতেদাঁত চেপে অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্টের সান্ত্বনাই যা প্রাপ্য এ দিন লাল-হলুদের।
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, নির্মল, গুরবিন্দর, ওপারা, সৌমিক, ভাসুম, পেন, মেহতাব, সুশান্ত (সঞ্জু), খাবরা, টোলগে। |