সাজানো ঘটনা, বলছে কংগ্রেস
রামদেবের মুখে কালি ছিটিয়ে ধৃত
যোগগুরু রামদেবের সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে এক নাটকের সাক্ষী থাকল রাজধানী। আসন্ন বিধানসভা ভোটে অণ্ণা শিবির কংগ্রেস-বিরোধী প্রচারে না নামলেও, রামদেব কিন্তু জানিয়েছিলেন, ভোটের আগে পাঁচ রাজ্যেই কালো টাকা, দুর্নীতির মতো বিষয় নিয়ে কংগ্রেস তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রচার করবেন তিনি। পূর্ব ঘোষণা মতো দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে জনতা পার্টির প্রধান সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর পাশে বসে আজ কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মুখ খুলেছিলেন যোগগুরু রামদেব। সে সময় হঠাৎই তাঁর দিকে কালো কালি ছেটানো হয়। রামদেবের ডান চোখ, মুখ এবং হাতেও কালি লেগে যায়। বিজেপির তরফে এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করা হলেও কংগ্রেস কিন্তু বলছে, এই কালি ছেটানোর ঘটনা পুরোপুরি ‘সাজানো’।
উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহের সরাসরি অভিযোগ গোটা ঘটনাটি আসলে সঙ্ঘ পরিবার তথা আর এস এসের ‘চক্রান্ত’। অণ্ণা হজারের আন্দোলন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়ার পর বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবার চাপে পড়েছে। তারা ফের রামদেব-অণ্ণাকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে চাইছে। দিগ্বিজয়ের কথায়, “আগেই বলেছিলাম রামদেব এক জন ঠগ। এখন সেটাই প্রমাণিত হল।”
রামদেবের হাতে, মুখে লেগে রয়েছে কালি।
কালি ছেটানোর ওই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই কমরান সিদ্দিকি নামে ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন সেখানে উপস্থিত রামদেবের ভক্ত-শিষ্যরা। তাকে মারধরও করা হয়। সে সময় পুলিশ এসে সিদ্দিকিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লির বাসিন্দা কামরানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে। ২০০৮-এ বাটলা হাউস সংঘর্ষ মামলায় কামরানের এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এক আবেদনকারী।
রামদেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জয়দীপ দাবি করেন, হাতে একটি ‘ওয়াকিটকি’ নিয়ে সেখানে ঢুকে কামরান নিরাপত্তারক্ষীদের মতো আচরণ করছিল। জয়দেবের আরও দাবী, সিদ্দিকির কাছ থেকে এক বোতল অ্যাসিড-ও মিলেছে। গায়ে কালি লাগার পরই রামদেব সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করে দেন। পরে বলেন, “আমরা কালো টাকা, দুর্নীতি-র রোধ করার কথা বলি। তার বিনিময়ে এই পুরস্কার পেলাম।” কালো টাকা বা দুর্নীতির মতো ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে তিনি মুখ খুলেছেন বলেই তাঁকে এ ভাবে বারবার ‘আক্রান্ত’ হতে হচ্ছে বলেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যোগগুরু।
প্রত্যাশিত ভাবেই এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী বলেন, “রামদেব এক জন আন্দোলনকারী। তাঁর ওপর হামলাকে নিন্দা করছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে।” বিজেপির মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেন, “কিছু দিন আগে প্রশান্ত ভূষণ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ পওয়ারের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সরকারের কঠোর হাতে দোষীদের শাস্তি দেওয়া উচিত।” রামদেবকেই কেন বারবার ‘হেনস্থা’ হতে হচ্ছে, তা নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করতেও ছাড়াননি তিনি। ঘটনার সমালোচনায় সরব হয়েছেন অণ্ণা হাজারেও তাঁর কথায়, “রামদেবের মুখে কালি ছিটিয়ে দেশের গণতন্ত্র আজ কালিমালিপ্ত হল।”
অভিযুক্ত কমরান সিদ্দিকি।
তবে, যোগগুরুর উপর কালি ছেটানোর এই ঘটনা পুরোটাই ‘সাজানো’ বলে অভিযোগ করল কংগ্রেস। দিগ্বিজয় সিংহ আজ বলেন, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কামরান সিদ্দিকি যে ভাবে বহাল তবিয়তে এসে কালি ছিটিয়ে দিয়েছে, তা দেখেই এই সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া এই ঘটনার পর কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তোলাই মুখ্য ষড়যন্ত্র ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি বরাবর কংগ্রেস বিরোধিতা করেছে। দিল্লির ওখলায় কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে কামরান প্রচার করেছিল। তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এন ডি এ আমলে কত অনুদান পেয়েছিল তা-ও তদন্ত করে দেখা উচিত।

ছবি: রয়টার্স


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.