এক দিনের সংক্ষিপ্ত সফরে নেপাল ঘুরে গেলেন চিনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও। ২০০১ সালে ঝু রংজির পর গত এক দশকে এটাই কোনও চিনা রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম নেপাল সফর। গত মাসের ২০ তারিখে তিন দিনের সরকারি সফরে কাঠমান্ডু আসার কথা ছিল জিয়াবাওয়ের। শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতেই জিয়াবাওয়ের এই ঝটিকা সফর বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নিরিখে জিয়াবাওয়ের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। চিনকে চাপে রাখতে সম্প্রতি ভিয়েতনামের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে নজর দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাল্টা চাপ দিতে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির উপরে প্রভাব বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে চিনও। জিয়াবাওয়ের আজকের সফর সেই কৌশলেরই অঙ্গ কি না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
|
বাবুরাম ভট্টরাইয়ের সঙ্গে ওয়েন জিয়াবাও। ছবি: এপি |
জিয়াবাওয়ের সফরের বিষয়ে দু’দেশের তরফেই চূড়ান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। মূলত নিরাপত্তার কারণে এবং তিব্বতিদের বিক্ষোভ এড়াতেই এই ব্যবস্থা। ঘণ্টাখানেকের সফরে জিয়াবাও বৈঠকে বসেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই, মাওবাদী নেতা প্রচণ্ড, প্রেসিডেন্ট রাম বরণ যাদবের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে। বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে অবশ্য কোনও তরফই কিছু জানায়নি। তবে নেপালের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ১৩.৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে চিন। এর মধ্যে পোখরায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং নেপালের
বিভিন্ন জায়গায় অন্তত তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে।
জিয়াবাওয়ের আজকের সফর ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল কাঠমান্ডু শহর জুড়ে। কোনও রকম ঝামেলা এড়াতে শহর জুড়ে অন্তত ১৫৪ জন তিব্বতিকে আটক করে পুলিশ। নিরাপত্তার স্বার্থে দুই নেতার বৈঠক থেকে দূরে রাখা হয় সংবাদমাধ্যমকেও। ঘটনার প্রতিবাদ করেছে নেপালের সাংবাদিক সংগঠনগুলি। |