সেনার সঙ্গে ‘সন্ধি’ গিলানি-জারদারির
দেশের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামলাতে আজ ময়দানে নামলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি।
আজ মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে মুখোমুখি হন গিলানি ও পাক সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কিয়ানি। বৈঠকের পরে কিয়ানিকে পাশে দাঁড় করিয়ে তিনি বললেন, “সরকার ও সেনার মধ্যে তৈরি হওয়া জটিলতা কাটাতে সরকারি সব মহলেরই আমাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। সাধারণ মানুষের জন্যেও সেটাই ভাল হবে।” এ দিন সেনার প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর মুখে। “সেনাবাহিনীই হল দেশের স্তম্ভ এবং শক্তিও বটে”, বলেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
পিছিয়ে ছিলেন না প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিও। এক দিকে সরকার এবং অন্য দিকে সেনা ও সুপ্রিম কোর্টের চাপে কোণঠাসা জারিদারির সঙ্গে আজ দেখা করলেন কিয়ানি। তবে তাঁদের মধ্যে ঠিক কী কথা হয়েছে, সরকারি ভাবে তা জানতে পারা যায়নি। তবে টেলিভিশনের পর্দায় জারদারিকে হাসিমুখেই দেখতে পাওয়া যায়।
একই সঙ্গে, সেনা এবং সুপ্রিম কোর্টের চাপে পড়ে এ বার জারদারিকে নিয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে খানিকটা হলেও সরে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে গিলানির দল। অন্তত শাসক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির পদক্ষেপ থেকে সে কথা স্পষ্ট। দলীয় সূত্রের খবর, জারদারির বিরুদ্ধে বন্ধ হয়ে যাওয়া মামলা ফের শুরু করার জন্য সুইস কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হতে পারে পিপিপি। উল্লেখ্য এই দলেরই শীর্ষস্থানীয় নেতা জারদারি-পুত্র বিলাবল ভুট্টো।
প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু পুরনো মামলা রয়েছে যা ২০০৭ সালে অর্ডিন্যান্স করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি ওই মামলাগুলি ফের চালু করতে পারে বলে গিলানি সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট যে চরম সময়সীমা দিয়েছিল, তা শেষ হচ্ছে সোমবার। এত দিন এ নিয়ে কোনও রকম উচ্চবাচ্য না করায় গিলানিকে ‘অসৎ’ বলে আক্রমণ করে শীর্ষ আদালত। গত কাল ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো ওই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন শীর্ষস্থানীয় আমলাকে গ্রেফতার করেছে। এর পরেই আজ নড়েচড়ে বসেছে পিপিপি। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাই গত বার বলেছিলেন পাক সংবিধান অনুযায়ী যে কোনও আইনি প্রক্রিয়া থেকে সরে থাকার রক্ষাকবচ রয়েছে প্রেসিডেন্টের। সরকার কোনও ভাবেই জারদারির বিরুদ্ধে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো মামলাগুলি ফের শুরু করবে না। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শরিক দলগুলো ও পিপিপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পরামর্শে এ বিষয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করছে গিলানি সরকার।
২০০৭-এ যে অর্ডিন্যান্স করে জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি-মামলাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেই অর্ডিন্যান্সকেই দু’বছর পরে খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এবং তখনই মামলাগুলি ফের শুরু করার কথা আদালতের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়। আগামী সোমবার সেই মামলারও শুনানি শুরু হচ্ছে। মেমোগেট-কাণ্ড নিয়েও একটি শুনানি রয়েছে ওই দিনই। সাক্ষী দিতে আসছেন পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ। এই ইজাজই পাক সেনা-অভ্যুত্থান নিয়ে গোপন স্মারকলিপি ফাঁস করে দেন। একই সঙ্গে দাবি করেন, এই ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত আমেরিকায় পাক রাষ্ট্রদূত হুসেন হক্কানি। তাঁর আরও দাবি, জারদারির হয়েই হক্কানি ওই স্মারকলিপি লিখেছিলেন। ইজাজ প্রথমে সাক্ষ্য দিতে পাকিস্তানে আসতে রাজি হননি। পরে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রহমান মালিক তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ায় তিনি আসতে রাজি হন। আজ তিনি জারদারিকে কটাক্ষ করে বলেন, “আদালতে সব সত্যি কথা ফাঁস করে দেব। আমার কাছে এমন প্রমাণ রয়েছে যে, আপনি ও আপনার দুর্দান্ত আইনজীবীর দল পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।” তবে কবে তিনি পাকিস্তানে আসছেন, সে ব্যাপারে মুখ খোলেননি ইজাজ।
পাকিস্তানে ফেরার কথা আগেই জানিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট তথা সেনাপ্রধান মুশারফ। আজ ফের এক বার সে কথা শোনা গেল তাঁর মুখে। দুবাই থেকে আজ মুশারফ বলেন, “প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও আমি দেশে ফিরতে চাই। আমার মনে হয় এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমার দেশে ফেরাটা খুবই প্রয়োজন। আমরাই একমাত্র দেশের মানুষের জন্য বিকল্প সরকার গঠন করতে পারি।” নির্দিষ্ট করে কবে ফিরছেন না জানালেও ২৭ থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন সেনাশাসক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.