ডুবন্ত জাহাজ থেকে উদ্ধার ৪ হাজার, মৃত ৩
সেটাও ছিল বিলাসবহুল প্রমোদতরী। এ-ও তাই। ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল উত্তর অতলান্তিক মহাসাগরের এক চোরা হিমবাহে ধাক্কা লেগে সলিলসমাধি হয়েছিল টাইটানিকের। একশো বছর আগের সেই আতঙ্কের রাত কাল ফিরে এসেছিল ইতালীয় প্রমোদতরী কোস্টা কনকর্ডিয়ার চার হাজার যাত্রীর জীবনে। আটলান্টিকের হিম জলে সাহায্যের অপেক্ষা করতে করতে ঠান্ডায় জমেই মারা গিয়েছিলেন টাইটানিকের দেড় হাজার যাত্রী। কালও বালির চরে ধাক্কা লেগে জাহাজ হেলে পড়লে অনেক যাত্রী হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান টিরেনিয়ান সাগরে। লাইফবোট নিয়ে হুড়োহুড়ির মধ্যে হাড় হিম করা জলে ঝাঁপও দেন বহু যাত্রী। শেষ পর্যন্ত তফাৎ গড়ে দেয় অবশ্য প্রযুক্তির উন্নতি আর উদ্ধারের দ্রুততা। গিগলিও দ্বীপের কাছে প্রমোদতরী ডুবছে খবর পেয়েই কাল দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন উদ্ধারকারীরা। তাঁদেরই তৎপরতার ফলে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বেশির ভাগ যাত্রীকেই। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এখনও নিখোঁজ ৭০ জন।
বিপদ-সাগর
ইতালির গিগলিও দ্বীপের কাছে বালির চরে ধাক্কা খেয়ে ডুবছে
প্রমোদতরী কোস্টা কনকর্ডিয়া। মারা যান তিন জন। ছবি: রয়টার্স
প্রাণে বেঁচে গেলেও কালকের সেই আতঙ্কের রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছে না মিঠুন মণ্ডল। জাহাজে রেস্তোরাঁর ম্যানেজার হিসেবে কোস্টা কনকর্ডিয়াতেই মিঠুনের প্রথম চাকরি। প্রথম বার জাহাজে ওঠা। আর প্রথম বারেই কোনও মতে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরে আসার টাটকা অভিজ্ঞতা। ২৬ বছরের এই যুবক জানালেন, “জাহাজে ধাক্কা লাগার প্রায় এক ঘণ্টা পর আমাদের সতর্ক করা হয়। তত ক্ষণে যাত্রীরা ঠেলাঠেলি করে লাইফবোটে ওঠার চেষ্টা করছেন। ১৫০ জন যাত্রী-পিছু একটিমাত্র লাইফবোটের ব্যবস্থা ছিল।”
যাত্রীদের বয়ানে জানা গিয়েছে, কাল সন্ধেয় বন্দর ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জাহাজটি। নৈশভোজের টেবিলে বসে তখনও তাঁরা বুঝতে পারেননি, ঠিক কী হয়েছে। ঠিক টাইটানিকের মতোই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পর যাত্রীদের আসল ঘটনার কথা জানানো হয়। তত ক্ষণে জাহাজটির বেশ কিছুটা ডুবে গিয়েছে। রাতের অন্ধকারে দিশাহীন যাত্রীরা দৌঁড়ে ডেকে পৌঁছনোর চেষ্টা করলে হেলে যাওয়া জাহাজের ডেক থেকে বেশ কয়েক জন গড়িয়ে পড়ে যান জলে। অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে মারা পারমেগিয়ানি নামে এক যাত্রী বললেন, “মনে হচ্ছিল যেন টিভিতে দেখা টাইটানিকের দৃশ্যগুলো নিজের চার পাশে দেখতে পাচ্ছি। চার দিক অন্ধকার। তার মধ্যে কানে আসছে শুধু চিৎকার-আর্তনাদ। এখনও বুঝতে পারছি না, হঠাৎ কী হয়ে গেল।”
বহু যাত্রী লাইফবোটের অপেক্ষায় না থেকে প্রাণ বাঁচাতে লাফ দেন হাড় হিম করা ঠান্ডা জলেই। বেশ কিছু ক্ষণ সাঁতরে পৌঁছে যান কয়েকশো মিটার দূরের সমুদ্রতটে। যাঁরা তীরে পৌঁছতে পারেননি, তেমন ২০ জনকে অবশ্য হেলিকপ্টার থেকে উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ আরও ৭০ জনের খোঁজ চালাতে হেলিকপ্টার, লাইফবোটের পাশাপাশি ডুবুরিও নামানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ৩,২০৬ জন যাত্রী এবং ১,০২৩ জন কর্মীকে রাখা হয়েছে নিকটবর্তী স্কুল, গির্জা এবং সরকারি ভবনে।

মৃতের ‘বার্তা’ও দেবে ফেসবুক
দুনিয়াব্যাপী অসংখ্য মানুষের প্রতি মুহূর্তের খবরের সঙ্গে সঙ্গে এ বার থেকে ফেসবুক দিতে চলেছে মৃতের শেষ ‘বার্তা’ও। খবরটির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন ফেসবুক কতৃপক্ষ। ‘ইফ আই ডাই’ নামে নতুন অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে এসেছে ফেসবুক। এটির সাহায্যে জীবিতাবস্থাতেই ফেসবুকে কোনও বার্তা বা ভিডিও যা ব্যবহারকারী হয়তো তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশ করতে চান, রেকর্ড করে রাখা যাবে। এর পর ফেসবুকের বন্ধুদের মধ্যে তিন জনকে মনোনীত করে রাখতে হবে। ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পর এই তিন জন তাঁর মৃত্যুর সত্যতা স্বীকার করে নিলেই ওই বার্তা তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে প্রকাশিত হয়ে যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.